যুদ্ধ বন্ধের পর ভারতকে দেয়া পাকিস্তানের চিঠিতে কী লেখা আছে?

fec-image

যুদ্ধবিরতিতে উত্তেজনা শান্ত হয়েছিল। দুই পক্ষের সামরিক কর্মকর্তারদের মধ্যে ফোনালাপও হয়। সেখানে একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ও শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ না নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়।

কিন্তু সিন্ধু পানি চুক্তির বিষয়ে সমাধান না হওয়ায় ফের উত্তেজনা বাড়ছে। দুদিন আগেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে ‘পানি সমস্যার সমাধান না হলে’ দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে পড়তে পারে।

পানি সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতা যুদ্ধের শামিল হবে। এবার বিষয়টি নিয়ে ভারতে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে ইসলামাবাদ।

চিঠিতে ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ ও ভিত্তিহীন’ বলে নাকচ করে দিয়েছে পাকিস্তান সরকার।

পাকিস্তানের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ফেডারেল সেক্রেটারি সৈয়দ আলি মুর্তজার পাঠানো চিঠিতে আরও বলা হয়, ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তিতে এমন কোনো ধারা নেই যা একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করার সুযোগ দেয়।

একইসঙ্গে ভারতের যে ভাষায় চুক্তি স্থগিতের নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তা চুক্তির কোথাও উল্লেখ নেই।

এদিকে, বিশ্বব্যাংকও জানিয়েছে, ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি একতরফা স্থগিত করেছে, যা ঠিক নয়। বিশ্বব্যাংকের সভাপতি অজয় বঙ্গ জানান, পাকিস্তান-ভারত সিন্ধু জল চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত বা পরিবর্তন করা যাবে না। সিন্ধু চুক্তিতে যেকোনো পরিবর্তনের জন্য উভয়েরই পারস্পরিক সম্মতি প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, চুক্তিটি যেভাবে তৈরি করা হয়েছিল, তাতে স্থগিতাদেশের কোনো বিধান নেই। হয় এটি বাতিল করতে হবে, নয়তো অন্য একটি চুক্তি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হতে হবে। এর জন্য দুই দেশের একমত হতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শুরু থেকেই পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে ভারত। তবে, হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার এবং

একটি বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ তদন্তে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছে ইসলামাবাদ। তারপরেও পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। পাল্টা ব্যবস্থা নেয় পাকিস্তানও।

এ নিয়ে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকি সংঘাতে রূপ নিয়েছে। গত ৬ মে মধ্যরাতে অপারেশন সিন্দুর নাম দিয়ে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।

এরপর ১০ মে ভোরে ফের পাকিস্তানের বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে দিল্লি। এর জবাব দিতে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ শুরু করেছে পাকিস্তান। ভারতের ১১টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসলামাবাদ। ব্যবহার করা হয় ফাতাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্র।

পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের চরম উত্তেজনার মধ্যে ১০ বিকেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সম্মতির কথা জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান, ভারত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন