রাঙামাটিতে শেষ সময়ে জমজমাট পশুর হাট, দাম বেশ চড়া


আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রতি বছরের ন্যায় রাঙামাটি শহরে এবারও অস্থায়ীভাবে প্রধান পশুর হাট-বাজার বসেছে পৌর ট্রাক টার্মিনাল এলাকায়। পাশাপাশি আরেকটি উপ-হাট বসানো হয়েছে শহরের সমতা ঘাটে। শনিবার থেকে হাটগুলোতে পশু বিকিকিনি শুরু হয়েছে।
জেলা শহরের পৌর ট্রাক টার্মিনাল এলাকার প্রধান পশুর হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে- বড়, মাঝারি, ছোট সব ধরণের গরু এবং ছাগল হাটে তোলা হয়েছে। চারলাখ টাকা থেকে শুরু করে ষাট হাজার টাকা স্বাদ এবং সাধ্যের মধ্যে সবাই পশু ক্রয় করতে পারবেন। হাটে এইবার সবচেয়ে বড় গরুটির দাম হাকানো হয়েছে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এরপর আরেকটির দাম হাকানো হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা।
এছাড়াও বড় আকারের দেশি গরুগুলো দেড় লাখ টাকা, মাঝারি আকারের গরুগুলো ১ লাখ ২০ হাজার থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আর ছোট আকারের গরুগুলো ৭০ হাজার থেকে শুরু করে ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে ক্রেতা সাধারণ বলছে দাম বেশ চওড়া। ৬০ হাজার টাকার দামের গরু ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করছেন গরু বিক্রেতারা।
জুরাছড়ি উপজেলা থেকে জেলা শহরের পৌর ট্রাক টার্মিনাল হাটে গরু নিয়ে এসেছেন জ্ঞানজ্যোতি চাকমা। তিনি বলেন, ‘আমি নিজের পালিত গরু নিয়ে আসছি একটি। দাম হাঁকিয়েছি ৪ লাখ ৭০হাজার টাকা। ৪ লাখ দিলে বিক্রি করে দিবো।’
লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়ন থেকে আসা গরু বিক্রেতা মো. নাজিম উদ্দিন পার্বত্যনিউজকে বলেছেন, এইবার হাটে ১২টি গরু এনেছি। গত কয়েকদিনে পাঁচটি বিক্রি করে দিয়েছি। আশা করছি লাভবান হতে পারবো।
বাঘাইছড়ি উপজেলা থেকে আসা গরু বিক্রেতা আব্দুল জলিল বলেন, ‘হাটে ১৯টি গরু নিয়ে আসছি। আরও ১০০টি গরু আনা হবে। এখনো বিক্রি করিনি। আজ-কালের মধ্যে বিক্রি হয়ে যাবে।’
শহরের তবলছড়ি এলাকা থেকে আসা ছাগল ব্যবসায়ী ধনী মিয়া বলেন, ‘হাটে ১৩টি ছাগল নিয়ে আসছি। ৭টি বিক্রি করে দিয়েছি। আশাকরছি লোকসান হবে না।’
গরু কিনেতে আসা ব্যবসায়ী মো. আলমগীর বলেন, ‘গরু দেখতে আসছি। ৭০-৮০হাজার টাকার মধ্যে গরু পছন্দ হলে নিয়ে যাবো। অন্যান্য বছরের তুলনায় পশুর দাম কিছুটা বেশি এমনটা বলছে ক্রেতা সাধারণ।’
পৌর ট্রাক টার্মিনাল এর ইজারাদার রুহুল আমিন বলেন, ‘পশু বিকিকিনি জমজমাট। দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছি না।’
রাঙামাটি পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়-পরিবেশ দূষণ রোধে এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক রাখতে পৌরসভার আওতাধীন ৯টি ওয়ার্ডের ৪২টি স্থানে পশু জবাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রটি জানায়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়- হাটের নিরাপত্তা দিতে এবং জাল টাকা সনাক্তের জন্য প্রতিটি হাটে পুলিশের একটি করে টিম নিয়োজিত রয়েছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় থেকে জানানো হয়- অন্যান্য বছরের ন্যায় জেলাই এইবার অস্থায়ী ২৯টি পশুর হাট বসানো হয়েছে। হাটগুলোতে পশু সেবায় নিয়োজিত রয়েছে ভেটেরিনারি সার্জনের নেতৃত্বে ২৯টি মেডিকেল টিম।
রাঙামাটি জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: বরুণ কুমার দত্ত বলেন- জেলায় ৩৪হাজার ২২৮টি পশুর চাহিদা থাকলেও পবিত্র ঈদুল আজহার জন্য এইবার ৩৮হাজার ৬২৫টি পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উদ্বৃত্ত তিন পার্বত্য জেলার পশুগুলোকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার চাহিদা মেটাতে পাঠানো হবে।
প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘জেলার কোরবানির উপযুক্ত পশুগুলোকে বিষাক্ত কোন পণ্য ব্যবহার না করে সম্পন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রস্তুত করা হয়েছে।’