রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনিয়া সড়কে চাঁদাবাজির শিকার সিএনজি চালকরা
রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনিয়া সড়কে চলাচলকারি অটোরিক্সা (সিএনজি) চালকদের কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ চালকরা এভাবে চলতে থাকলে ওই সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা অটোরিক্সা (সিএনজি), টেম্পু পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের রামু উপজেলা লাইনম্যান আলী হোছাইন বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা অটোরিক্সা (সিএনজি), টেম্পু পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে দীর্ঘদিন রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনিয়া সড়কে অটোরিক্সা (সিএনজি) যাত্রী পরিবহন করে আসছে। এর মধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি পার্কিং স্টেশনে সম্প্রতি একটি সমিতির পরিচয় দিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র এ সড়কে চলাচলকারি সিএনজি চালক এবং লাইনম্যানদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না দেয়ায় তারা সিএনজি চালক ও লাইনম্যানদের বিভিন্নভাবে শারীরিক নাজেহাল, মারধরের হুমকী-ধমকি দিচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা অটোরিক্সা (সিএনজি), টেম্পু পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের রামু উপজেলা শাখার সভাপতি ছৈয়দ আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন জানান, গত ১২ অক্টোবর বেলা ১২টায় চাঁদাবাজ চক্রের সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা এলাকার মো. সোলাইমানের ছেলে আবদুর রহমান (৪৭), রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তুলাতলী গ্রামের মনির আহমদ মনুর ছেলে আবদুল মান্নান (৩৭), নাইক্ষ্যংছড়ি মসজিদ ঘোনার গোলাল মেম্বারের ছেলে আক্তার হোসেন (৪৫), অজ্ঞাত ব্যক্তি আলী হোছাইন (৩২), মো. হারুন (৩১), সহ আরো ৭/৮ জনের একটি দল লাটি-সোটা নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সিএনজি পার্কিং স্টেশনে অবস্থানরত চালক ও লাইনম্যানদের অশ্লীল কথাবার্তা ও হুমকী-ধমকি দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এসময় তারা কক্সবাজার জেলা অটোরিক্সা (সিএনজি), টেম্পু পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের আওতাধিন রামু উপজেলা লাইনম্যান হিসেবে দায়িত্বরত লাইনম্যান মোজাফ্ফর আহমদ ও নুরুল হাকিমকে প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে সেখানে থাকা চালকদের জিম্মি করে স্টেশনে থাকা লাইন পরিচালনার টেবিল ও চেয়ারগুলো নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় তিনি শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ এর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
রামু উপজেলা পরিবহন মোটর শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি আহসান উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন জানিয়েছেন-সমবায় সমিতির নামে পরিবহন চালক-শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় দূঃখজনক। এ সংগঠনের নামে প্রতিটি অটোরিক্সা (সিএনজি) থেকে ২০ টাকা, মাইক্রো-জীপ থেকে ৫০-১০০ টাকা করে চাঁদা নেয়া হচ্ছে।
একাধিক সংগঠনের চাঁদা আদায়ের কারণে গাড়ি চালকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে এবং যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়েও বাধ্য হচ্ছেন। চাঁদাবাজির এ ঘটনা বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। প্রশাসন এ ব্যাপারে তড়িৎ প্রদক্ষেপ না নিলে এ সড়কে যাত্রীবাহি সকল যানবাহন চলাচল বন্ধের কর্মসূচি দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাঁদা দাবি ও মারধরের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত আবদুর রহমান জানান-তিনি একটি সমবায় সমিতির লাইসেন্স নিয়েছেন। এ সমিতির সভাপতিও তিনি। এ সমিতির নামেই এসব চাঁদা নিচ্ছেন। এছাড়া একটি শ্রমিক ফেড়ারেশনেরও অনুমতি নিয়েছেন। তবে তিনি এসব সমিতি বা সংগঠনের নাম জানাতে পারেননি।
এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি জানিয়েছেন, নাইক্ষ্যংছড়িতে যারা চাঁদা নিচ্ছে তাদের অনুমোদিত সংগঠন আছে। এরপরও চাঁদা নেয়ার বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন, চাঁদা নেয়াটা সংশ্লিষ্ট পরিবহন সংগঠনসমূহের বিষয়। যদি সড়কে বিশৃঙ্খলা হওয়ার মতো কোন পরিস্থিতি হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।