রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিক সনদ দেয়া হবে না
কক্সবাজারের টেকনাফে মিয়ানমারের ৩২ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎকার ও সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সোয়া ৫টার সময় টেকনাফের নদী নিবাস নামক রেস্ট হাউসে এ সভা শেষ হয়।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি জানান, রোহিঙ্গাদেরকে ২০টি গ্রামে পূর্ণবাসন করা, নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে বিদ্যালয় এবং হাসপাতালের ব্যবস্থা করার করা হবে। তবে নির্দিষ্ট এলাকা ব্যতীত কোথাও গমন করতে পারবে না এবং রোহিঙ্গাদের কোন নাগরিক সনদ দেয়া হবে না।
রাখাইন স্টেটের প্রধান চউ নাইংয়ের (MR Saw naing chief of state, rakhine) নেতৃত্বে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করার জন্য রোহিঙ্গা পরিবারদের সাথে মত বিনিময় আলোচনা সভা ও সাক্ষাৎকার সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপ-সচিব) সামসুদ্দৌজা নয়ন।
সভায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ৫টি দাবি আদায়ের বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক সনদ প্রদান করা, নিজ দেশে, নিজ ভিটায় প্রত্যাবর্তন করা, লেখাপড়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা, স্বাধীনভাবে চলাচল ও নিরাপদ জীবনের ব্যবস্থা এবং জীবিকা প্রদানের ব্যবস্থা করাসহ ৫ দফা দাবি মিয়ানমারের প্রতিনিধির কাছে তুলে ধরেন।
সভায় উপস্থিত টেকনাফ নয়াপাড়া শালবাগান ২৬ নং ক্যাম্পের মাঝি রোহিঙ্গা নেতা বদরুল ইসলাম। তিনি আরো জানান, ” বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের সরকারের প্রতিনিধি দলের বক্তব্য সন্তোষজনক ছিল না।”
বিশেষ করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনভাবে চলাচল করতে না দেওয়া মানে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থমকে দেওয়ার মত বলেও জানান রোহিঙ্গা নেতা বদরুল।
আলোচনা সভায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ, শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান, এনএসআই পরিচালক কমডোর মো. নিয়ামত এলাহী, ডিজিএফআই কর্নেল জি এস কর্নেল মোরশেদ আলম চৌধুরী, ১৬ এপিবিএন অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি হাসান বারী নুরসহ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প এর সি আই সি গণ।
আলোচনা সভায় বিভিন্ন রোহিঙ্গা পরিবারের ২০০ জন রোহিঙ্গা উপস্থিত ছিলেন। ১০০ জনের সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ হয়। মিয়ানমারের সরকারি প্রতিনিধ দল মঙ্গলবার ৩১ অক্টোবর সকালে টেকনাফ এসে আলোচনা সভা ও সাক্ষাৎকার পর্ব শেষে সন্ধ্যা ৬টার সময় টেকনাফ ট্রানজিট জেটি ২টি কাঠের ইঞ্জিন চালিত নৌকায় মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে ফিরে যান ।
জানা যায়, প্রতিনিধি দলটি বুধবার (১ নভেম্বর) পুনরায় টেকনাফ এসে অন্যান্য রোহিঙ্গাদের সাথে মতবিনিময় ও সাক্ষাৎকার নেবেন।