আজ কে উঠবে ফাইনালে, সিলেট না কুমিল্লা?

fec-image

জয়-পরাজয় (১২ খেলায় ৯ জয়, ৩ পরাজয়) আর পয়েন্ট (১৮) সব সমান। শুধু নেট রানরেটে মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্স (০.৭৩৭) ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের (০.৭২৩) চেয়ে খানিকটা এগিয়ে। আর গতবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা দ্বিতীয়। নিয়ম অনুযায়ী এই ২ দলের দেখা হয়ে যাচ্ছে প্রথম কোয়ালিফায়ারে।

আজ রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শেরে বাংলায় মুখোমুখি হবে সিলেট ও কুমিল্লা। আর কোন হিসেব নিকেশ ও সমীকরণ নেই। এ ম্যাচের বিজয়ী দল সরাসরি ফাইনালে পৌঁছে যাবে।

১৬ ফেব্রুয়ারি শেরে বাংলায় ফাইনাল খেলবে কে? মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট স্ট্রাইকার্স? না ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স? সে প্রশ্ন সামনে রেখে আজ রোববার সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় শেরে বাংলায় মুখোমুখি পুরো বিপিএলে কর্তৃত্ব করা এই দুটি দল।

রাউন্ড রবিন লিগের প্রথম ও ফিরতি পর্ব মিলে ২ বারের মোকাবিলায় দু’পক্ষের জয়-পরাজয়ও সমান। একবার করে জিতেছে সিলেট আর কুমিল্লা এবং কাকতালীয় ব্যাপার হলো দু’দলের জয়ের ব্যবধানও এক; সমান ৫ উইকেটে।

প্রথম দেখা হয় ৯ জানুয়ারি শেরে বাংলায়। প্রথমে ব্যাট করে ১৪৯ রানে থামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সর্বাধিক ৫৭ রান (৪৩ বলে) আসে উইকেটনক্ষক জাকের আলি অনিকের ব্যাট থেকে।

তৌহিদ হৃদয়ের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং (৩৭ বলে ৪ ছক্কা, তিন বাউন্ডারি সহ ৫৬) এবং অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের দায়িত্বশীল ২৮ রানের হার না মানা ইনিংসে ১৪ বল আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মাশরাফির দল।

১৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামে ফিরতি মোকাবিলায় প্রতিশোধ নেয় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। দুই পেসার পেসার মুকিদুল ইসলাম (২/২৮) ও পাকিস্তানের হাসান আলি (২/৩০) এর সাঁড়াসি আক্রমণের মুখে মাত্র ১৩৩ রানে আটকে যায় সিলেট।

দুই বিদেশি থিসারা পেরেরা (৩১ বলে ৪৩*) ও ইমাদ ওয়াসিম (৩৩ বলে ৪০*) হাল না ধরলে সিলেটের স্কোর ১০০ পার হতো কিনা সন্দেহ। লিটন দাসের আক্রমণাত্মক ও বিধ্বংসী উইলোবাজিতে (৪২ বলে চার ছক্কা ও ৭ বাউন্ডারিতে ৭০) ইনিংসের অর্ধেকটা হাতে রেখে এক ওভার আগেই জয় তুলে নেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

ফাইনালের আগে দু’দলের লাইন আপে ঢালাও পরিবর্তন। সিলেট স্ট্রাইকার্সের দুই প্রধান বোলার মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিম পিএসএল খেলতে পাকিস্তান ফিরে গেছেন।

তাদের দু’জনার বিকল্প হিসেবে মাশরাফির দলে এসেছেন জেমস লিন্ডে আর ইসুরু উদানা। লিন্ডেও ইমাদ ওয়াসিমের মত বাঁ-হাতি বোলার, ব্যাটও করতে পারেন। আর পেসার মোহাম্মদ আমিরের মত উদানাও বাঁ-হাতি পেসার। দুজনই এখন ঢাকায়। আজ দুপুরে সিলেটের সাথে প্র্যাকটিসও করেছেন।

অধিনায়ক মাশরাফির দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্ব, অভিজ্ঞ মুশফিকের দায়িত্বশীলতা আর ফর্মে ও রানে থাকা তিন তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয় ও জাকির হাসানের সমন্বয়ে সিলেট উজ্জীবিত, অনুপ্রাণিত এবং লড়াকু দল। প্রতিপক্ষ হিসেবেও বেশ কঠিন।

অন্যদিকে কুমিল্লা কোয়ালিফায়ারের আগে আরও শক্তি বাড়িয়েছে। তাদের ইংলিশ রিক্রুট মইন আলি চলে এসেছেন। আর দুই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্দ্রে রাসেল ও সুনিল নারিনতো আগে থেকেই দলের সাথে এবং শেষ ২ ম্যাচ খেলেওছেন। তারাও থাকবেন।

সব মিলিয়ে কুমিল্লা এখন আরও সমৃদ্ধ। আরও শক্তিশালী। নামীদামি আর বড় তারকায় ঠাসা। লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, মোস্তাফিজ, বাঁ-হাতি স্পিনার তানভির ও তরুণ পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধও প্রায় নিয়মিত পারফরম করছেন। সব মিলিয়ে এ মুহূর্তে বিপিএলে সবচেয়ে ব্যালান্সড দল কুমিল্লা।

আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারিন আর মইন আলি বিপিএল কেন, বিশ্বের যে কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরেই বড় নাম। অনেক বড় নির্ভরতা। যারা সবাই ম্যচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন। নিজের দিনে ব্যাট ও বল হাতে ম্যাচ ভাগ্য গড়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। এমন তিন পারফরমারের সমন্বয় কুমিল্লাকে করেছে বহুগুনে সমৃদ্ধ।

এ দলের বিপক্ষে টিম ওয়ার্ক আর স্থানীয় পারফরমারদের পারফরমেন্সই বড় নির্ভরতা সিলেটের। এখন দেখার বিষয় কোয়ালিফায়ারে কারা জয়ী হয়? মাশরাফির তুলনামূলক কম তারকায় সাজানো ‘টিম সিলেট’, নাকি অনেক তারার দল কুমিল্লা?

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন