শেষ মুহূর্তের ঝড়ে বরিশালকে হারালো কুমিল্লা

fec-image

ছোট লক্ষ্য ছুড়ে দিলেও বল হাতে বেশ লড়াই করেছে ফরচুন বরিশাল, যদিও আন্দ্রে রাসেলের সামনে সেই লড়াই ধোপে টিকেনি, এড়াতে পারেনি হার। কুমিল্লার কাছে শীর্ষ দুইয়ে থাকার লড়াইয়ে হেরে গেছে বরিশাল, হেরেছে ৫ উইকেটে। সেই সাথে টানা অষ্টম জয়ের দেখা পেল কুমিল্লা। জয়ের নায়ক মুকিদুল ইসলাম। তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়েই মাত্র ১২১ রানে অলআউট হয় বরিশাল। ৫ উইকেট শিকার করেন তিনি।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ১২২ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা নামের মতো করে হয়নি। শুরুতেই ধাক্কা খায় তারা, দলীয় ১৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় কুমিল্লা, ৬ বলে ১১ রান করে ফেরেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ওয়ানডাউনে নেমে ইনিংস বড় করতে পারেননি জাকির আলি, ১৬ বলে ১০ রান করে সাকিবের শিকার হন তিনি। অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও ধরতে পারেননি হাল, তার ব্যাটে আসে ১০ বলে ৫ রান।

তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন লিটন দাস। আগ্রাসী রূপে না দেখা দিলেও, দলের রানের চাহিদা পূরণ করেই খেলছিলেন তিনি। যদিও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি, ৩৯ বলে ৩৬ রান আসে তার ব্যাটে। এর মাঝে ফেরেন মোসাদ্দেকও, দলের প্রয়োজনে হাল ধরতে পারেননি তিনি, ১ রানেই বাজে তার বিদায় ঘণ্টা। সব মিলিয়ে ১৪. ১ ওভারে ৭৪ রান করে কুমিল্লা, সাথে হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট।

এরপর কয়েক ওভার চাপে থাকলেও বিপদ বাড়েনি। খুশদিল শাহ ও আন্দ্রে রাসেল মিলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন। এবারের আসরে প্রথমবার খেলতে এসেই ম্যাচ জিতিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল, অপরাজিত ছিলেন ১৬ বলে ৩০ রানে। ১৯ বলে ২৩ রান করে খুশদিল শাহ। ৯ বল আর ৫ উইকেট বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত হয় কুমিল্লার। দুটো উইকেট পান ইবাদত হোসেন, ১টি করে উইকেট নেন সাকিব, খালিদ, ওয়াসিম।

এর আগে অসহায়ত্বের প্রদর্শনী ছিল বরিশালের ইনিংসে। পুরো ২০ ওভারও খেলতে পারেনি দলটি, ৫ বল বাকি থাকতেই ১২১ রানে থেমেছে তাদের ইনিংস। যার পেছনের কারিগর মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, মাত্র ২৩ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দলের বিপদে জ্বলে উঠতে পারেননি সাকিব, মাত্র ৬ রান করে ফেরেন তিনি।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই ফেরেন এনামুল হক বিজয়, তানভীর ইসলামের শিকার হয়ে ফিরেন ৬ বলে মাত্র ৩ রানে। আরেক ওপেনার ফজলে মাহমুদও ফিরেন রান আউটে কাটা পড়ে, ৮ বলে ৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তবে এইদিন ওয়ানডাউনে নামেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার ব্যাটেই বরিশালের রান যেন সামান্য গতি খুঁজে পায়।

চার নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে এইদিন হতাশ করেন সাকিব। মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করলেও তা আর হয়ে ওঠেনি, মুকিদুল ইসলামের প্রথম শিকার হন তিনি। মুকিদুলের শিকার হন মাহমুদউল্লাহও, ২৬ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৬ রান আসে তার ব্যাটে। মাঝে ইফতেখার আহমেদ ফিরেন আন্দ্রে রাসেলের শিকার হয়ে ৮ বলে ৪ রানে।

টপঅর্ডার ব্যাটারদের হারিয়ে ধুকতে থাকে বরিশাল। ১০.২ ওভারে মাত্র ৬৪ রানে ৫ উইকেট হারায় কীর্তনখোলা পাড়ের দলটি। যখন শঙ্কা দেখা দেয় তিন অংকের ঘরে পা দেয়া নিয়ে, তখন দলকে এই লজ্জা থেকে রক্ষা করেন করিম জানাত আর মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে। দু’জনের ৪১ বলে ৪৭ রানের জুটিতে তিন অংকের ঘর পাড়ি দেয় বরিশাল। ১৮ বলে ১৭ করে মিরাজ আউট হলে ভাঙে এই জুটি।

১৮তম ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানেন মুকিদুল ইসলাম। পর পর দুই বলে ফেরান করিম জানাত আর ওয়াসিম জুনিয়রকে। ওয়াসিম ০ রানে ফিরলেও জানাতের ব্যাটে আসে গুরুত্বপূর্ণ ২৬ বলে ৩২ রান। শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে মুগ্ধ চতুরঙ্গা ডি সিলভাকে ফেরালে শেষ হয় বরিশালের ইনিংস। ১২১ রানেই থেমে যায় তারা। সেই সাথে এবারের বিপিএলের প্রথম বোলার হিসেবে ৫ উইকেট শিকার করেন মুগ্ধ, খরচ করেন মাত্র ২৩ রান।

এদিকে এই হারে অদলবদল হয়েছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে। যেখানে কোয়ালিফায়ার থেকে সরাসরি ফাইনালে যাবার লড়াইয়ে এগিয়ে গেল কুমিল্লা, তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তারা৷ তিন নাম্বারে নেমে গেছে সাকিবের দল, ফরচুন বরিশাল। তবে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন