আরাকানে মুসলিমদের উপর মানবাধিকার লংঘনের দায়ে নাসাকা কমাণ্ডারের ৪০ বছর জেল

Nasaka 17.7.2013

জমির উদ্দিন:

আরাকানে মানবাধিকার লংঘনের দায়ে নাসাকা কমাণ্ডার বাহিনীর কমান্ডার কর্ণেল মং গাইকে সে দেশের সামরিক আদালত ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে আরাকান নিউজ এজেন্সি নারিনজারা। এদিকে নাসাকা বাহিনীর কমান্ডার আটকের ঘটনায় পুরো বাহিনীতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কায় মায়ানমার সরকার সর্তকর্তার সাথে দ্রুত সীমান্ত এলাকা থেকে নাসাকা বাহিনীকে সরিয়ে নিচ্ছে। একই সঙ্গে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা সমূহের চাপের মুখে বিলুপ্ত করা হয়েছে নাসাকা বাহিনী। সে স্থানে বাংলাদেশ সীমান্তে মোতায়েন করা হচ্ছে আধা সামরিক বাহিনী লুনপিন। বিশ্বস্ত সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে।

মিয়ানমার সরকার নাসাকা বাহিনীকে বিলুপ্ত ঘোষণার তিনদিনের মাথায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের দায়িত্ব নিয়েছে নতুন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী লুনপিন। জাতিসংঘসহ আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে মিয়ানমার সরকার বির্তকিত নাসাকাকে বাহিনীকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাসাকা বাহিনীকে সরিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী লুনপিনকে মোতায়েন করেছে মায়ানমার সরকার । সীমান্তে নতুন আধাসামরিক বাহিনী নিয়োগ করায় স্থানীয়দের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
সূত্র জানায়, কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে নাসাকা বাহিনীকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সীমান্তরক্ষী নাসাকা বাহিনীকে বিলুপ্ত করে লুনপিনকে বাংলাদেশ অংশে সীমান্তের রক্ষীবাহিনী হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে মায়ানমার সরকার।
এ ব্যাপারে বিজিবি’র চট্টগ্রাম রেঞ্জের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী মর্তুজা জানান, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাসাকা বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমার সরকার কিছু জানায়নি। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষনে রেখে বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহাদী জানান, যেহেতু সীমান্ত থেকে নাসাকা বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, সেহেতু নতুন বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করা জরুরি। এরইমধ্যে বিজিবি’র পক্ষ থেকে নতুন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, সীমান্তে গোলযোগের কারণে লুনপিন বাহিনীকে সরিয়ে ১৯৯১ সালে সামরিক ও আধা-সামরিক বাহিনী নিয়ে গঠিত নাসাকা বাহিনীকে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয় মিয়ানমার সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর রোহিঙ্গা পল্লীতে দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর ঘটনায় নাসাকা বাহিনীর সস্মৃক্ততার বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হয়। ফলে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নাসাকা বাহিনীর কমান্ডার কর্নেল মং গাইকে আটক এবং ১২ জুলাই নাসাকা বাহিনীকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে মায়ানমার সরকার।

একটি সূত্র জানায়, নাসাকা বাহিনীকে পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়ার পর লুনপিন বাহিনী ও আত্মসর্মপন করা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি)’র সদস্যদের সমন্বয়ে নতুন একটি সীমান্ত রক্ষী বাহিনী গঠন করার পরিকল্পনা করছে মায়ানমার সরকার। বর্ডার গার্ড ফোর্স (বিজিএফ) নামে সে দেশের জোয়ানরা সীমান্তরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন