ইসলাম ও মুসলিম সংস্কৃতি আমাদের দেশেরই অংশ: জার্মান প্রেসিডেন্ট

fec-image

জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার বলেছেন, ইসলাম ধর্ম, মুসলমান ও মুসলিম সংস্কৃতি আমাদের এই দেশের শিকড়ে পৌঁছে গেছে। তারা এখন আমাদের দেশেরই অংশ। কিছু উগ্র-ডানপন্থি গোষ্ঠী ইসলামফোবিয়ার মাধ্যমে দেশে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে।

গত শনিবার অ্যাসোসিয়েশন অব ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের (ভিআইকেজেড) ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কোলনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জার্মান প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জার্মানি আদর্শিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আমাদের দেশ ধর্মমুক্ত। বরং এর অর্থ হচ্ছে ধর্ম ও ধার্মিকদের স্থান দেওয়া, বিশ্বাসীদের স্বাধীনতা রক্ষা করা।

স্টেইনমায়ার আরো বলেন, ইসলাম ধর্ম, মুসলিম জীবনব্যবস্থা, মুসলিম সংস্কৃতি আমাদের দেশে শিকড়ে পৌঁছে গেছে। তাই আজকে ইসলামের বৈচিত্র্য, ৫০ লাখ মুসলমানের বৈচিত্র্যও আমাদের দেশের অংশ। তবে কিছু উগ্র-ডানপন্থি গোষ্ঠী দল শরণার্থী সঙ্কটকে সামনে রেখে বর্ণবাদ ও ইসলামফোবিয়ার মাধ্যমে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে চাইছে।

তার মন্তব্যটি এমন সময়ে এসেছে, যখন বর্ণবাদ ও ইসলামফোবিয়া জার্মানির দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। বার্লিনভিত্তিক একটি বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২২ সালে জার্মানিতে মোট ৮৯৮টি ইসলামফোবিয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়। তবে ধারণা করা হয়, প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হবে।

সমীক্ষা অনুসারে, বর্ণবাদ জার্মানির মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে অনেক ঘটনায় হেনস্তার শিকার হয়েছেন মুসলিম নারীরা। নথিভুক্ত ঘটনাগুলোর মধ্যে পাঁচ শতাধিক ছিল অপমান ও হুমকি প্রদানসহ নানা ধরনের মৌখিক আক্রমণ। এছাড়া ৭১টি শারীরিক ক্ষতি, ৪৪টি সম্পত্তির ক্ষতি, তিনটি অগ্নিসংযোগ এবং ৪৯টি সহিংসতার ঘটনাও নথিভুক্ত করা হয়।

সমীক্ষাসূত্রে জানা গেছে, মুসলিম তরুণ ও শিশুদের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা বাড়ছে। নারীদের তাদের সন্তানদের উপস্থিতিতে আক্রমণ করা হয়েছে এবং গর্ভবতী মহিলাদের পেটে লাথি বা আঘাত করা হয়েছে।

জার্মানির শুমারি অনুযায়ী, দেশটির জনসংখ্যা ৮৪ মিলিয়ন, যার মধ্যে পাঁচ মিলিয়ন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক। পশ্চিম ইউরোপে ফ্রান্সের পরে জার্মানিতেই সবচেয়ে বেশি মুসলিমের বসবাস।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম, জার্মান প্রেসিডেন্ট, মুসলিম সংস্কৃতি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন