ইয়াবার বিরুদ্ধে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়ায় কৃষকলীগ নেতার উপর হামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ফেসবুকে ইয়াবা নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদকের মাথা ফাটালেন নিজ দলের এক নেতা।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নাইক্ষ্যংছড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের সম্মুখে ফেরদৌস সিকদারের দোকানে দুপক্ষের মধ্যে পারিবারিক একটি সালিশি বৈঠক চলছিল।

বৈঠকে অভিভাকদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মামুন শিমুল এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আবছার। সালিশি বৈঠকের মধ্যে এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে কৃষকলীগ নেতার ওপর হামলা চালায় আবছার। এসময় হামলায় কৃষকলীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মামুন শিমুল (৩৪) মারাত্মকভাবে আহত হন।

স্থানীয়রা আহত অবস্থায় রক্তাক্ত শিমুলকে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে কক্সবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে এ ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়িতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আহত কৃষকলীগ নেতা সাইফুদ্দিন শিমুল বলেন, সপ্তাহ আগে নিজের ফেসবুকে মাদকের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লেখালেখি করেছি। লেখায় চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তথ্য তুলে ধরে বান্দরবান পুলিশ সুপারকে ট্যাগ করে দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মানবপাচারকারী জাপান রফিকের মেয়ে জামাই নুরুল আবছার পরিকল্পিতভাবে আমার উপর হামলা চালিয়েছে।

তার অভিযোগ, জাপান রফিক ও আত্মীয় এরশাদ নূরের পরিবারটি ইয়াবা ও মানব পাচারের সাথে জড়িত। ইতোপূর্বে এই সিন্ডিকেটের অনেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আটক হয়েছে। তবে ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত নুরুল আবছারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, হামলাকারী আবছারের পরিবারটি প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ মানুষ তাদের আতঙ্কে কিছু বলতে পারেননা। পরিবারটি সরকারের উচ্চ পদস্থ এক আমলার আত্মীয় হওয়ায় প্রশাসনও কোন বিষয়ে এ্যাকশনে যেতে অনীহা দেখান। হামলাকারী নুরুল আবছার সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য একজন প্রার্থীও।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, হামলা-মারধরের খবর পেয়েছি। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কোনো পক্ষ থেকেই এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন