উন্নয়ন বোর্ডের সৌর প্যানেলে আলোকিত দূর্গম রেমাক্রি ও তিন্দু

fec-image

থানচি উপজেলার রেমাক্রি ও তিন্দু ইউনিয়নের মানুষ কখনো স্বপ্ন দেখেনি কুপি বাতি বা হারিকেন ছেড়ে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবেন। এখন সেই স্বপ্ন ডিঙ্গিয়ে রাতের আধার আলোকিত করার পাশাপাশি ফ্যান, টিভি, ফ্রিজের স্বপ্নও পূরণ হয়েছে তাদের।

দূর্গম এই দুটি ইউনিয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হোস্টেল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সড়কগুলোসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সন্ধ্যা নামলেই জ্বলে উঠছে সৌর বিদ্যুতের আলো। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রদত্ত সৌর বিদ্যুতে এখকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হচ্ছে।

বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৩ কি:মি দূরবর্তী রেমাক্রি ও তিন্দু ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই বিভিন্ন হোস্টেল ও উপজাতীয় পল্লীগুলোতে সৌর বিদ্যুতের আলোয় পড়াশুনা করছে শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যুতের আলোয় মহিলারা গৃহস্থলীর কাজ করছে। এছাড়া গ্রামগুলোতে সৌর বিদ্যুতের সাথে আইপিএস ও জেনারেটর সংযুক্ত করে তারা এখন ফ্রিজ, কালার টিভি, ফ্যান, আয়রণ ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারছে।

রেমাক্রি ইউনিয়নের বাসিন্দা লাল পিয়াম বম এই প্রতিবেদককে বলেন- তিনি বর্তমানে বাসায় ফ্রিজ, টিভি, ফ্যানসহ ইলেক্সট্রনিক্স সব সামগ্রী ব্যবহার করছেন। এতে করে তার নিজস্ব কটেজে বেড়াতে আসা পর্যটকদেরও সেবা দিতে পারছেন তিনি। অথচ এক সময় তারা কখনো বিদ্যুতের স্বপ্নও দেখেনি। সরকারিভাবে দেওয়া সৌর বিদ্যুতের কারনে অন্ধকারাচ্ছন্ন রেমাক্রির প্রতিটি গ্রাম আলোকিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার মি প্রু মারমা বলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। সেই কারনে বিদ্যুত বিহীন এলাকায় সৌর বিদ্যুৎ বিতরণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করছেন পার্বত্যমন্ত্রী।

পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া এসব সৌর বিদ্যুতের কারনে মানুষের বসতী ও গ্রামীণ সড়ক আলোকিত হয়েছে।

তিন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মং প্রু মারমা বলেন, বর্তমান সরকারের সোলার স্থাপন প্রকল্পটি একটি যুগান্তকারী প্রকল্প। পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রদত্ত সৌর বিদ্যুত তাঁর ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান আলোকিত হয়েছে। এতে এলাকার মানুষ রাতের আধারেও নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান ইউনিট দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন ইয়াছির আরাফাত জানান- থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৩৮০ ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছর ৪২০টি সৌর বিদ্যুত বিতরণ করা হয়।

এছাড়া পাশের ইউনিয়ন তিন্দুতে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ২৫৬ ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিতরণ করা হয়েছে ২০০টি সৌর বিদ্যুত।

তিনি আরো জানান- যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছানো সম্ভব নয় সেসব এলাকার প্রতিটি ঘরে সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে আলোকিত করার জন্য পার্বত্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে চাহিদা নিয়ে তারা কাজ করছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন