এবার ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ, স্বত্ব দাবি কলেজছাত্রের

fec-image

নতুন বছরে নতুন বইয়ের পাতায় স্বপ্ন খোঁজা কোমলমতি শিশু-কিশোরদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস চাপা পড়েছে নেতিবাচক আলোচনা-সমালোচনায়। নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে গুগল ট্রান্সলেটরের ব্যবহার নিয়ে চলমান বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। এবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ অনুযায়ী প্রণীত এবং ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির জন্য নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক ‘শিল্প সংস্কৃতি’ (পরীক্ষামূলক সংস্করণ) বইয়ের একটি প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে।

বইটির সম্পাদনায় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন ও মঞ্জুর আহমদ। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ষষ্ঠ শ্রেণির ওই বইয়ের প্রবন্ধ নিয়ে এমন অভিযোগ এনে নিজের লেখক স্বত্ব দাবি করেছেন নাসরুল্লাহ শাকুরি নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

তিনি দাবি করেন, ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে ‘টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেন। যা ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট অনলাইন গণমাধ্যম পূর্বপশ্চিমে প্রকাশিত হয়। সেই লেখাটিরই কিছু অংশ বাদ দিয়ে একই শিরোনামে ষষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এতে লেখকের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

বইটি রচনায় ছিলেন- তানজিল ফাতেমা, ড. মো. কামালউদ্দিন খাঁন, শেখ নিশাত নাজমী, কামরুল হাসান ফেরদৌস, মো. রেজওয়ানুল হক, মুহাম্মদ রাশীদুল হাসান শরীফ, তানজিনা খানম ও সুলতানা সাদেক।

নাসরুল্লাহ শাকুরি বলেন, একজন লেখকের একটি লেখা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হওয়া তার জন্যে সম্মানের, অত্যন্ত গৌরবের। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এখানে লেখকের নাম উল্লেখ না করে লেখায় সামান্য কিছু পরিবর্তন এনে লেখাটি পাঠ্যবইয়ে ছাপানো হয়েছে। এতে কোনো অনুমতিও নেওয়া হয়নি। যা ছিলো অকাঙ্ক্ষিত।

এদিকে, পাঠ্য বইয়ের ভুল সংশোধন বিষয়ে দুইটি জাতীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি জাতীয় তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল হালিম এবং অপর কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার।

এসব বিষয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি বইয়ের সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, এই লেখার মধ্যে প্লেজারিজমের অভিযোগ সত্য। তবে এটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে করা হয়েছে। এ বই রচনায় যারা জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠ্যপুস্তকে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ নিয়ে জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো ফরহাদুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জাতীয় পর্যায়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে তারা যে রিপোর্ট দিবে সেই রিপোর্টের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন