ওসি প্রদীপ ও তাঁর সহযোগীদের ফাঁসি চেয়ে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ

fec-image

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তাঁর সহযোগীদের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণ।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে টেকনাফের সাধারণ জনতা ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে মানববন্ধন-সমাবেশ আনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রদীপের নির্যাতন ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা প্রদীপের ফাঁসি দাবি করেছে।

নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন টেকনাফ সদরের হাম জালাল, মুরাদ হাসান, হালিমা বেগম ও হোয়াইক্ষ্যংয়ের হাফেজ আহমদ। তারা প্রদীপের ফাঁসির দাবি জানান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেন। মানববন্ধন চলাকালীন ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, প্রদীপের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দেন তারা।

বিশেষ করে প্রদীপের নির্মম নির্যাতনের শিকার সংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার প্রতিবাদি শ্লোগানে মুখরিত হয় আদালতপাড়া। তার সঙ্গে কণ্ঠ মেলায় ক্ষুব্ধ জনতা।

সবার দাবি একটাই, ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তাঁর সহযোগীদের ফাঁসি দিতে হবে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া লোকজনের মধ্যে কেউ জানান, তাঁরা ওসি প্রদীপের হাতে নিহতদের পরিবার; কেউ কেউ দাবি করেন, তাঁরা ক্রসফায়ার থেকে ফিরে আসা লোক কিংবা নির্যাতিত ব্যক্তি। তাঁরা সবাই ওসি প্রদীপের ফাঁসির সাজা চান।

এদিকে, বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল রায় ঘোষণা করবেন। দুপুরের পর রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন আদালতের ইন্সপেক্টর চন্দন কুমার দাশ।

তিনি জানান, আসামিদের দুপুর ২টার দিকে আদালতে হাজির করা হবে। এরপর রায় ঘোষণা করা হবে।

রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল ৭টা থেকে আদালত প্রাঙ্গণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মামলার আসামি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ১৫ জনকে সকালে আদালতে নিয়ে আসার কথা থাকলেও, দুপুরে আনা হবে।

এদিকে আদালতের একটি সূত্র জানিয়েছে, সিনহা হত্যা মামলার রায় সকালে দেওয়ার কথা থাকলেও দুপুর গড়িয়ে বিকাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। পরে ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন