কক্সবাজার সৈকতে আবারও ডলফিনের দাপাদাপি

fec-image

দীর্ঘ দিন পর আবারও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কাছে ডলফিনের দাপাদাপি উপভোগ করেছেন স্থানীয়রা। শুক্রবার (১২ নভেম্বর) ও শনিবার ভোর সকালে কক্সবাজার সৈকতের কাছাকাছি ডলফিনের ছুটাছুটির দৃশ্য ধারণ করেন সৈকতের জেটস্কি চালক সোনা মিয়া। ১৩ মিনিট ধরে ডলফিনের সঙ্গে খেলায় মেতে ছিলেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, ভোরের কুয়াশা ছেদ করে সূর্য মাত্রই রশ্নি ঢেলেছে সাগরের নীল জলে। এ সময় সৈকতে পর্যটকদের আনাগোনা কম থাকে। এই সময়টাতেই কক্সবাজারের সৈকতের লাবণী থেকে কলাতলী পয়েন্টের সমুদ্রের একটু দুরে দেখা মিলছে ডলফিন পালের। কখনো দুই একটা করে আবার কখনও দল বেঁধে সাগর জলে সাঁতার-ডোবা খেলায় মাতে ডলফিন।

সোনামিয়া জানান, সাগরের সঙ্গে সব সময় যাদের সখ্যতা। লাইফ গার্ড কর্মীরা বলছেন, শীত মৌসুমে সমুদ্রের মাছ চলে আসে সাগরের কিনারায়। তাই ডলফিনও মাছ শিকারে সমুদ্র পাড়ের কাছাকাছি চলে আসে।

স্থানীয় জেলেদের ভাষ্যমতে, গত বছর লকডাউনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কিছু ডলফিন খেলা করতে দেখা যায়। এরপর কোথাও উধাও হয়ে যায়। পরে গত দুইদিনের বেশি সময় ধরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ডলফিনের বিচরণ চোখে পড়ে।

উখিয়ার সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার স্থানীয় জেলে সোনারপাড়া এলাকার ফরিদ মাঝি জানান, সাগরে মাছ ধরতে গেলে গভীর সাগরে মাঝেমধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে ডলফিনের দেখা মেলে। বিশেষ করে শীত মৌসুমের শেষের দিকে এসব ডলফিনের দল সাগরে ঘুরে বেড়ায়। তবে গত ২ থেকে ৩ বছর আগেও একবার এসব ডলফিন সাগর উপকূলের কাছাকাছি চলে আসতে দেখা গেছে। তবে এটা অহরহ ঘটে এমন না।

রামু পেঁচারদ্বীপ এলাকার জেলে রুহুল আমিন জানান, সাগরে ডলফিন নতুন কিছু নয়। তবে উপকূলের কাছাকাছি চলে আসায় স্থানীয়দের মধ্যে কৌতূহল জমেছে। গত বছরও হিমছড়ি এলাকায় সাগর উপকূলের কাছাকাছি চলে আসতে দেখেছি ডলফিন। সাগরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পানিতে ডলফিনের দল সাঁতরে বেড়ায়।

কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানান, স্তন্যপায়ী এই প্রাণীটি বহু জাতের হয়। তবে সমুদ্র উপকূলে যা দেখা যায়, তা মূলত শুশুক জাতের ডলফিন।

তিনি জানান, ডলফিন মূলত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ পানিতে বিচরণ করে। ফলে স্বচ্ছ পালিতে এসব স্তন্যপায়ী প্রাণী গুলো খেলায় মেতে উঠে।

বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সাঈদ মুহাম্মদ শরীফ বলেন, “কক্সবাজারের সোনাদিয়া ও মহেশখালী বঙ্গোপসাগর চ্যানেলে দুটি ডলফিন পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। একেকটি পরিবারে ১০/১২টির বেশি ডলফিন থাকে। সাগরে মূলত তারা দল বেঁধে চলাফেরা করে। বর্তমানে চ্যানেলগুলোতে প্রতিনিয়ত তাদের দেখা মেলে। যেহেতু তারা নিরিবিলি পছন্দ করে, সেহেতু সাগরের জনমানবহীন নীরবতার সুযোগে সাগরের লাবনী পয়েন্টে চলে এসেছে হয়তো।”

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন