করোনা পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের বেপরোয়া চলাচল
“করোনা গোটা বিশ্বকে থামিয়ে দিতে পারলেও রোহিঙ্গাদের কাবু করতে পারেনি।”রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশেপাশের এলাকার চলমান পরিস্থিতি দেখে স্থানীয়রা ঠিক এমনটাই মনে করছে। রোহিঙ্গাদের চলাচল এখনও পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক। করোনাকে উপেক্ষা করে অবাধে চলাচল করছে এক স্থান হতে অন্য স্থানে।
বর্তমানে এই অদৃশ্য প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিশ্ববাসীকে গ্রাস করে মানুষের একমাত্র আবাসস্থল পৃথিবীতে রাজত্ব করছে। এহেন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে বিশ্বের শক্তিশালী ও উন্নত দেশগুলোও। সিদ্ধান্ত, সমাধান ও করোনা (কোভিড-১৯) থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বিশ্বের বাঘা বাঘা নেতারাও।
এই মরণঘাতী ভাইরাসটির কারণে আক্রান্ত দেশগুলোতে লকডাউন জারি করা হয়েছে। সর্বদা সচেতন থাকতে বলা হচ্ছে। জনসমাগম ও অন্যান্য প্রভাব বিস্তারমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এজন্য করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য আক্রান্ত দেশগুলোতে সবাইকে স্ব স্ব বাড়িতে অবস্থান করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু কক্সবাজারের উখিয়ায় অবস্থিত রোহিঙ্গাদের চলাচলের চিত্র ভিন্ন। তাদের মধ্যে মোটেও সচেতনতা বোধ দেখা যাচ্ছেনা বললেই চলে। সরকার লকডাউনের নির্দেশনা দেওয়ার পরেও অবাধ বিচরণ বন্ধ করছেনা রোহিঙ্গারা। এনিয়ে স্থানীয়দের মনে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করেছে। তারা স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনাকে অগ্রাহ্য করে চলছে।
রোহিঙ্গারা এখনও বাজারে আসা, গাড়ি বহরে এক স্থান হতে অন্য স্থানে আসা-যাওয়া, অহেতুক ঘোরাঘুরি করা, বেড়াতে যাওয়া এবং খোলামেলা ভাবে বিচরণ করা বন্ধ করছেনা। মূলত প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে এদিক-ওদিক চলাচল করেতে পারছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতনরা।
স্থানীয় সুশীলরা মনে করেন, ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা তাদের খুব নিকটবর্তী স্থানে বসবাস করছে। তারা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় এবং ঘন বসবাসের কারণে ভাইরাসটি ছড়াতেও পারে। এনিয়ে প্রতিমুহূর্তে শঙ্কিত, আতঙ্কিত তারা।
তারা আরও মনে করেন, এই ভাইরাস একবার ছড়ালেই আশেপাশের এলাকাসহ পুরো কক্সবাজারকে গ্রাস করবে। ক্রমশ বেড়ে যাবে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তাই বলা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের অবাধ ও বেপরোয়া চলাচল বন্ধ না করলে যেকোনো মুহূর্তেই বিপদ বয়ে আসতে পারে।
এব্যাপারে স্থানীয় ০৫ নং পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন,”রোহিঙ্গারা কোনো শৃঙ্খলার মধ্যে নাই। এ জাতির করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞান না থাকার কারণে এই অবস্থা। বাস্তবে এদের অভ্যাসটাই খারাপ। সরকারের নির্দেশনায় গ্রামে গ্রামে ও ক্যাম্পের অলিগলিতে গিয়ে মাইকিং করে নিষেধাজ্ঞা করার পরেও তারা তা মানছেনা। সুড়সুড় করে বেরিয়ে আসছে ক্যাম্প থেকে কারণে অকারণে। কোনভাবেই তাদের অবাধ বিচরণ বন্ধ করা যাচ্ছেনা।’
তিনি আরো বলেন,”রোহিঙ্গারা বেপরোয়া হয়ে গেছে, জনসমাগম বৃদ্ধি করতেছে। তারা এভাবে দলদলে এসে অবাধ বিচরণ করলে করোনা নামক মহামারী থেকে বাঁচার উপায় আছে কি? প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন রোহিঙ্গা বিচরণ বন্ধ করতে হলে আরও কঠোর হতে হবে। কারণ নিজেরা বাচলেই মানবতা বাঁচবে।