৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

কাউখালীতে তিন ইটভাটা শ্রমিক অপহরণ মামলায় আটক ২

fec-image

রাঙামাটির কাউখালীতে ইটভাটা থেকে তিন শ্রমিক অপহরণের ঘটনায় ৩০ লাখ মুক্তিপণ দাবি করেছে সন্ত্রাসীরা। এদিকে অপহরণ মামলায় অভিযান চালিয়ে ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটককৃত হলো খাগড়াছড়ির বার্মাছড়ি থানার লক্ষীছড়ি এলাকার আদোঅং মারমার ছেলে ক্যমং মারমা (২২) এবং বান্দারবান সোয়ালক ইউনিয়নের মংলু মারমার ছেলে উক্যওয়াই মারমা (২০)।

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ১০টায় কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা লিচু বাগান এলাকা থেকে মুক্তিপণের অগ্রিম ৫ লাখ টাকা গ্রহণকালে তাদের আটক করা হয়।

জিজ্ঞাবাসদ শেষে আটককৃতদের রবিবার (১ জানুয়ারি) আদালতে প্রেরণপূর্বক ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা দু’জনই শ্রমিক অপহরণের সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। তবে অপহৃত তিন শ্রমিককে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অপহৃত ব্যক্তিরা কী অবস্থায় আছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

শ্রমিক অহরণের ঘটনায় ইটভাটার মালিক মো. ফারুক বাদী হয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর কাউখালী থানায় অজ্ঞাত ১০-১২ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর কাউখালী থানা পুলিশ অভিযানে নামে।

মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্রমিক অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা একাধিক মোবাইল নম্বর থেকে ইটভাটার মালিক ফারুকের কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা নিয়ে অপহরণকারীদের সাথে মালিক পক্ষের দর কষাকষি চলতে থাকে। এক পর্যায়ে অপহরণকারী সদস্যদের ২ জন মুক্তিপণের অগ্রিম ৫ লাখ টাকা নিয়ে কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা লিচু বাগান এলাকায় যেতে বলে। পুলিশের প্লান মোতাবেক মালিক পক্ষ টাকা নিয়ে চন্দ্রঘোনা এলাকায় গেলে পুলিশ কৌশলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই সন্ত্রাসীকে আটক করে।

কাউখালী থানার ওসি মো পারভেজ আলী জানিয়েছেন, বয়সে তরুণ হলেও আটককৃত দু’জন অত্যন্ত চতুরতার সাথে কথা বলছে। জিজ্ঞাসাবাদের তারা শ্রমিক অপহরণের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

ওসি বলেন, আটককৃতদের আদালতে প্রেরণ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে অপহরণের সাথে বাকীদের গ্রেফতার ও অপহৃদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে। আটককৃতরা নিজেদের বান্দারবানের মগ লিবারেশন আর্মির বহিষ্কৃত সদস্য বলে দাবি করেছে এবং তারা সংগঠিত হয়ে পুনরায় এমএলপি নামে নতুন দল গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে।

এদিকে তিন শ্রমিক অহরণের ঘটনায় ইউপিডিএফ (প্রসীত) ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) একে অপরকে দায়ী করেছে। ইউপিডিএফ (প্রসীত) সমর্থিত অনলাইন পোর্টাল সিএইসটি নিউজে এ ঘটনার জন্য ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দিকে ইঙ্গিত করে সংবাদ ছাপিয়েছে।

অপরদিকে শ্রমিক অপহরণের সাথে ইউপিডিএফ (প্রসীত) গ্রুপ সরাসরি যুক্ত বলে দাবি করেছেন ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) কাউখালী ইউনিটের আহ্বায়ক মারটিন চাকমা।

মারটিন জানান, রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা হয়ে প্রসীত গ্রুপ আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, চাঁদার দাবিতে ২৮ ডিসেম্বর বুধবার রাতে উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের তারাবনিয়া এলাকা থেকে ইটভাটার তিন শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কাউখালী, মামলা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন