খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের আধাবেলা সড়ক অবরোধ রবিবারের পরিবর্তে সোমবার

fec-image

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের আধাবেলা সড়ক অবরোধ রবিবারের পরিবর্তে সোমবার (২১ মার্চ) করা হয়েছে। জেলার দীঘিনালার বাবুছড়ায় ইউপিডিএফ’র প্রসীত গ্রুপের সামরিক কমান্ডার মিলন ওরফে সৌরভ চাকমা অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ নিরপত্তা বাহিনীর আটকের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর জেরে সংগঠনটি রবিবার খাগড়াছড়িতে আধাবেলা সড়ক অবরোধ আহবান করে।

শনিবার (১৯ মার্চ) সকালে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’র (ইউপিডিএফ) প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে খাগড়াছড়ি জেলায় রবিবারের আহুত আধাবেলা সড়ক অবরোধ একদিন পিছিয়ে সোমবার (২১ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পালন করা হবে জানান।

বিবৃতিতে সৌরভ চাকমার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ অবরোধ সফল করতে বাস, ট্রাক, জীপ, সিএনজি, টমটম মালিক-চালক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্টস কলের প্রতি আহবান জানান।
জরুরী ফায়ার সার্ভিস, এ্যমবুলেন্স ও লাশ বাহী গাড়ি, জরুরী ঔষধ সরবরাহকারী ও সংবাদপত্র বহনকারী যান, সংবাদ সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত সাংবাদিকদের গাড়ি এই অবরোধের আওতামুক্ত থাকবেব বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ মার্চ (মঙ্গলবার) সকাল ৮টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার বাবুছড়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র,গুলি ও বিপুল সামরিক সরঞ্জামসহ ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সামরিক কমান্ডার মিলন ওরফে সৌরভ চাকমাকে আটক করা হয়। আটকের সে অসুস্থ বোধ করলে তাকে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১১টায় সেখানে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পেয়ার আহম্মেদ। দীঘিনালা সূত্র জানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলার পলাতক ছিলেন।চিকিৎসকের মতে, মিলন চাকমা ওরফে সৌরভ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

অথচ ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সদস্যরা এ ঘটনাকে ভিন্ন খাটে প্রবাহিত করার জন্য উস্কানীমূলত তৎপরতা শুরু করে। ঐদিন বিকাল ৫টার দিকে দীঘিনালার বাবুছড়া বাজার এলাকায় ঢাকা শান্তি পরিবহনের একটি বাসের যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে পেট্রোল ঢেলে বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। একই সময় বাবুছড়া এলাকায় আরো দুটি ট্রলিতে অগ্নিসংয়োগ ও বেশ কয়েক জনকে মারধর করা হয়। এর পর থেকে দীঘিনালা উপজেলার বিভিন্ন সড়কে আংতকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাংগঠনিক সম্পাদক রুকন উদ্দিন জানান, দুর্বৃত্তরা মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বিকেলে দীঘিনালায় একটি বাস ও দুটি ট্রলিতে আগুন দেয়। শ্রমিক ও পরিবহনের নিরাপত্তা হুমকি থাকায় দূরপাল্লার বাস ছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত ব্যক্তি ফোন করে যানবাহন না চালানোর জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে ভয়ে কেউই দীঘিনালায় গাড়ী চালাতে সাহজ পাচ্ছে না।

এদিকে ঐদিন রাতে খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার জয়সেন পাড়া এলাকায় পাহাড়িদের কয়েকটি নবনির্মিত বাঙালিরা আগুন দিয়েছে মর্মে সামাজিত যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়। কিন্তু খবর নিয়ে জানা গেছে পুরো ঘটনাটিই সাজানো ও সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি নষ্ট করার পরিকল্পিত অপপ্রচার।

এ নিয়ে চিহিৃত মহলের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত বেশ কিছু অনলাইন ভিত্তিক পত্রিকা ও নিউজ পোর্টালের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক পেইজ-এ খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার মাইছছড়ির জয়সেনপাড়া এলাকায় কিছু উপজাতিদের নির্মিত বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনার সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এর জন্য দায়ী করা হয় ঐ এলাকায় বসবাসরত বাঙ্গালীদের। এই সংবাদের প্রেক্ষিতে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগণ, সাংবাদিক এবং সরকারী কর্মকর্তা সহ একটি দল ঐ সরেজমিনে পরিদর্শনে করেন। কিন্তু পুরো ঘটনায় নেহায়েতই মিথ্যা ও বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদীত বলে প্রমাণিত হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন