খাগড়াছড়িতে কোর্ট বসে ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যাক্ত ভবনে, নেই পর্যাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও স্টাফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি: প্রধানমন্ত্রীর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের ৪ বছরেও খাগড়াছড়িতে সিজিএম কোর্ট ভবন নির্মিত হয়নি। গণপূর্ত বিভাগের পরিত্যাক্ত টিন সেড ভবনে ঝুঁকির মধ্যে দিয়েই চলছে বিচার কাজ। নেই পর্যাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও স্টাফ। ফলে দূভ্যোর্গের বিচারক ও বিচার প্রার্থীরা। বিচার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।

বিচার বিভাগ স্বাধীনত ও পৃথকীকরণের সুবাধে ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর থেকে খাগড়াছড়িতে চালু হয় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম। অবকাঠামো না থাকায় খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় তলায় মাসিক ৬ হাজার টাকা ভাড়ায় সিজিএম কোর্টের কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি গণপূর্ত বিভাগের পরিত্যাক্ত টিন সেড ভবনে স্থানান্তরিত হয় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত।

২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা খাগড়াছড়ি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু চার বছর পার হলেও এখনো ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। কবে নাগাদ শুরু হবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।

সিজিএম কোর্ট ভবর নির্মিত না হওয়ায় জড়াজীর্ণ ও অপর্যাপ্ত স্থানে কোন রকম বিচার কাজ চালানো হচ্ছে। প্রতিদিন রোদে পুড়ে-বৃষ্টিতে ভিজে অপেক্ষা করতে হয় বিচার প্রার্থীদের। ব্যস্ততম সড়ক পার করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে আসামীদের আদালতে হাজির করা হয়ে থাকে।

খাগড়াছড়ি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোকাম্মেল হোসেন জানান, কোর্টে সুষ্ঠু বিচার কাজ পরিচালনার জন্য ৯ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৪ জন। ৭৯ জন স্টাফের বিপরীতে আছে ৪৫ জন। তিনি আরো বলেন, জড়াজীর্ণ ভবনে ভয় ও আতংকে কাজ করতে হয় বিচারক ও স্টাফদের। বেশ কয়েকবার আদালতের ভিতরে বিষাক্ত সাপ ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটেছে।

খাগড়াছড়ি আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল হোসেন জানান, সিজিএম কোর্টের নিমার্ন কাজ নিয়ে বিভিন্ন মহলের সাথে দেখা করেছি ও কথা বলেছি। কিন্তু কোন সুফল পাচ্ছি না।

খাগড়াছড়ি আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল মালেক মিন্টু জানান, দীর্ঘ দাবী ও আন্দোলনের ফসল হিসাবে জেলা ও দায়রা জজ কোর্ট চালু হলেও খাগড়াছড়ি জেলায় বিচার ব্যবস্থা এখনো চলছে শত বছর আগে বৃটিশ প্রণীত হিলট্রেক্স ম্যানুয়েলে ১৯০০ আইন অনুযায়ী। ফলে এ অঞ্চলের মানুষ সংবিধান অনুযায়ী আইনী সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হত দরিদ্র খাগড়াছড়িবাসী এ দ্বৈত বিচার ব্যবস্থা ও দুর্ভোগের অবসান চায়। তিনি বলেন, সিজিএম কোর্ট ভবন নিমার্ণ না হওয়ায় বিচারকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি মর্যাদা হানি হচ্ছে।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিনুর রহমান জানান, ভূমি জটিলতার কারণে খাগড়াছড়ি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত ভবনের নিমার্ণ কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে প্রকল্প পরিচালকের সাথে কথা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন