খাগড়াছড়ির ৬ উপজেলার প্রাপ্ত চুড়ান্ত বেসরকারী ফলাফল
আল-মামুন,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :
৪র্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে খাগড়াছড়ি জেলার ৬ উপজেলায় সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের পর ভোট গণনা শেষে চুড়ান্ত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, মাটিরাঙ্গা ও রামগড়ে বিএনপি, পানছড়ি ও খাগড়াছড়ি সদরে আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ, মহালছড়িতে জেএসএস সংস্কারপন্থী ও মানিকছড়িতে আওয়ামীলীগের প্রার্থী জয় লাভ করেছে।
এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর উপজেলার ভোট গণনায় ভুলত্রুটি থাকার অভিযোগ করে বিএনপির প্রার্থী কংচাইরী মারমাসহ বিএনপি এ ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুর্ণরায় ভোট গণনার দাবী করেছেন। এছাড়াও শালবনে একটি কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীর লোকজনদের মারধর ও পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ করেন তারা। এ সময় ভোট গণনা ছাড়াই উপজেলায় গণনার জন্য ব্যালট বাক্স কেন্দ্র থেকে নিয়ে আসা হয় বলে জানান প্রার্থী কংচাইরী মারমা। এরকম দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া খাগড়াছড়ি জেলায় ভোট গ্রহণ মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলার ৬টি উপজেলার চুড়ান্ত বেসরকারী ফলাফল নিম্নে দেয়া হলো:
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা
চেয়ারম্যান পদে ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থী চঞ্চুমনি চাকমা মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে ১৩ হাজার ৪শ ২৪ ভোটে জয়যুক্ত হয়েছে। এতে নিকটতম বিএনপির প্রার্থী দোয়াত-কলম প্রতীকে কংচাইরী মগ পেয়েছেন ১৩ হাজার ২শ ৬২ ভোট। তবে ভোটের এ ফলাফল ঘোষনা নিয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থীর পক্ষ থেকে আপত্তি ও ভুল ফলাফল ঘোষনার অভিযোগ করা হয়েছে। এসময় খাগড়াছড়ি জেলা সদরে এ নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেছে বিএনপি।
ভাইস-চেয়ারম্যান পদে রনিক ত্রিপুরা টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ৮ হাজার ২শ ৫৮ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। তার নিকটতম আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. শাহাব উদ্দিন সরকার উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে ৭ হাজার ৭শ ৬৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে বিউটি রানী ত্রিপুরা পদ্ম ফুল প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৩শ ৭১ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। এতে কলস প্রতীকের আরনা চাক্মা পেয়েছেন ১১ হাজার ৩শ ২০ ভোট।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা
চেয়ারম্যান পদে বিএনপির প্রার্থী তাজুল ইসলাম আনারস প্রতীক নিয়ে ১৬ হাজার ৯শ ৪৩ ভোট পেয়ে জয়যুক্ত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের সামশুল হক মোটর সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ১শ ৬৭ ভোট। ভাইস-চেয়ারম্যান পদে বিএনপির প্রার্থী মো. দেলোয়ার হোসেন চশমা প্রতীক নিয়ে ১৬ হাজার ৯শ ৫৬ ভোট পেয়ে জয়যুক্ত হয়। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. রফিকুল ইসলাম মাইক প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৪ হাজার ১শ ১১ ভোট। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে হাসিনা বেগম কলস প্রতীকে ১৯ হাজার ৫শ ৭১ ভোট পেয়ে জয় লাভ করে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাস প্রতীকে মনোয়ারা পেয়েছেন ১৬ হাজার ৭শ ১৪ ভোট।
পানছড়ি উপজেলা
চেয়ারম্যান পদে ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থী সর্বোত্তম চাকমা কাপপিরিচ প্রতীক নিয়ে ১০ হাজার ৭শ ৯৮ ভোট পেয়ে জয়লাভ করে। এখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী অনিমেষ চাকমা রিংকু মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮ হাজার ৩শত ৫১ ভোট। ভাইস-চেয়ারম্যান পদে লোকমান হোসেন চশমা প্রতীক নিয়ে ৬ হাজার ৩শ ৯৩ ভোট পেয়ে জয়যুক্ত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভূমিধর রোয়াজা টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫ হাজার ৮শ ৪৬ ভোট। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে রত্মা তঞ্চজ্ঞা হাঁস প্রতীক নিয়ে ১১ হাজার ৫৬ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শুভ্রা দেওয়ান তীরধনুক প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৫শ ৮২ ভোটে পরাজিত হয়।
মহালছড়ি উপজেলা
চেয়ারম্যান পদে জেএসএস এমএনলারমা গ্রুপের প্রার্থী বিমল কান্তি চাকমা কাপপিরিচ প্রতীকে ৮ হাজার ৮শ ৯৯ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নিলোৎপল খীসা মোটর সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৩শ ৮৩ ভোট। ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ক্যাচিংমিং চৌধুরী উড়োজাহাজ প্রতীকে ৭ হাজার ১শ ১৫ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বজিৎ চাকমা চশমা প্রতীকে পেয়েছে ৬ হাজার ৯শ ৪৪ ভোট। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে কাকলী খীসা প্রজাপতি প্রতীকে ৬ হাজার ৩শ ৪৭ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। এতে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুইনুচিং চৌধুরী পদ্মফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৫শ ৮২ ভোট।
মানিকছড়ি উপজেলা
চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আনারস প্রতীক নিয়ে ম্রাগ্য মারমা ১১ হাজার ৫শ ২১ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এস.এম রবিউল ফারুক মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮ হাজার ৩শ ৭৩ ভোট। ভাইস-চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের মো. তাজুল ইসলাম বাবুল টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৫শ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এম জাকির হুসাইন সিরাজ তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ৪শ ৬২ ভোট। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেলা আক্তার ফুটবল প্রতীক নিয়ে ১১ হাজার ৩শ ৪৮ ভোট পেয়ে জয় লাভ করে। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহিনা পেয়েছেন ৯ হাজার ৮শ ২৮ ভোট।
রামগড় উপজেলা
চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ১০হাজার ৪শত ৫৪ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো. শহীদুল ইসলাম ভূইয়া ফরহাদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী চাইথোয়াই চৌধুরী মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছে ৫ হাজার ১শ ২৬ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে টিয়া পাখি প্রতীকে ১১ হাজার ১শ ৬২ ভোটে মো. আব্দুল কাদের জয় লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মংসাপ্রু কার্বারী বই প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭ হাজার ২শ ৬০ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কলস প্রতীক নিয়ে খাদিজা আক্তার ১১ হাজার ৫শ ৩৮ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঝর্ণা ত্রিপুরা প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১০ হাজার ৮শ ২৫ ভোট।
এতে বিএনপির প্রার্থী দোয়াত-কলম প্রতীকে কংচাইরী মগ পেয়েছেন ১৩ হাজার ২শ ৬২ ভোট।