গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কাঁপছে হত দরিদ্র পথ শিশুরা

CIMG2384

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ঝেঁকে বসেছে শীত। এই শীত থেকে মুক্তি পেতে যে যার সাধ্যমত গরম কাপড় পড়ছে। বাড়তি গরম কাপড় থাকায় অনেকের কাছে এই মৌসুম আরামদায়ক। কিন্তু হতদরিদ্রদের কাছে এই মৌসুমটি খুবই কষ্টকর। যাদের গরম কাপড় নেই তাদেরকে কাবু করে রেখেছে শীত। এই শীতে কষ্টের মধ্যে দিয়ে তারা কোনভাবে দিনাতিপাত করছে।

গভীর রাত এবং ভোরে শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের বিভিন্ন মার্কেটের বারান্দা ও ফুটপাতে যেসব ছিন্নমূল লোকজন রাত যাপন করছে তাদের কষ্টের শেষ নেই। গরম কাপড়ের অভাবে তারা শীতের সাথে যুদ্ধ করে কোনভাবে রাত পার করছে। আর অপেক্ষা করছে পরদিন সকালের সূর্যের জন্য।

শীতার্থদের মধ্যে বেশি কষ্ট পাচ্ছে ছিন্নমূল পথশিশুরা। দেখা যায় তাদের মধ্যে কেউ-কেউ প্লাষ্টিকের বস্তা গায়ে দিয়ে শীতে কাঁপতে কাঁপতে রাত যাপন করছে কোন মার্কেটের বারান্দা বা ফুটপাতে। অনেকেই ছেড়া কাঁথা গায়ে দিয়ে রাত যাপন করছে। অনেকে আবার গুটিশুটি দিয়ে আগুনের পাশে বসে রাত পার করছে।

এছাড়াও শহরের পাহাড়ি এলাকা এবং নিন্মাঞ্চলে কিছু হত দরিদ্র লোক রয়েছে যারা অর্থের অভাবে একটি শীতের কাপড়ও কিনতে পারছে না। এ অবস্থায় সামর্থ্যবানদের কাছে তাদের প্রত্যাশা একটি গরম কাপড়।

পথ শিশু রায়হান বলে, সারাদিন টোকাই করে যে টাকা পাওয়া যায় তা দিয়ে একটি গরম কাপড় কিনার চেষ্টা করছে। কিন্তু কুলিয়ে উঠতে পারছে না। কারণ ওই টাকা দিয়ে খাবার যোগাতে হয় তকে। তাই শীতের কাপড় ক্রয় করতে পারছে না। রায়হান শীতের মধ্যে খুবই কষ্টে আছে। এছাড়া তার ঘুমাতে গিয়েও কষ্ট হয়। কারন তার কোন লেপ-তোষক নেই। যার ফলে কোনভাবে কষ্ট করে রাত্রি যাপন করতে হচ্ছে।

রিক্সা চালক লিয়াকত মিয়া বলেন, তার পরিবারে স্ত্রী-সন্তানসহ ৮ জন সদস্য। তিনি রিক্সা চালিয়ে সারাদিন যা আয় করেন তা দিয়ে পরিবারের খাবার যোগাতেই কষ্ট হয়। এর মধ্যে গরম কাপড় ক্রয় করার সামর্থ্য নাই।
কলেজ ছাত্র সাইফুল ইসলাম জানান, আমাদের সমাজে অনেক মানুষ রয়েছে যাদের একেক জনের কাছে ৩-৪ টি করে গরম কাপড় রয়েছে। আর কিছু মানুষ রয়েছে যাদের একটিও গরম কাপড় নেই। এ অবস্থায় সকলের সহযোগিতা দরকার দরিদ্রদের জন্য।

শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুর্ণবাসন কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক জেসমিন আক্তার জানান, শীতার্থ লোকজনকে সহযোগিতা করা সকলেরই দায়িত্ব। যাদের সামর্থ রয়েছে তারা যদি শীতে কষ্ট পাওয়া লোকজনের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে তাহলে হত-দরিদ্র লোকজন আর শীতে কষ্ট পাবেনা। এছাড়া আমাদের সমাজে অনেক সরকারি-বেসরকারি সংস্থা রয়েছে যারা গরম কাপড় দিয়ে সহযোগিতা করলে হতদরিদ্র লোকজন শীতের কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন