জঙ্গী দমনে অচিরেই নামছে খাগড়াছড়িতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশের কমান্ডো বাহিনী

hqdefault

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
হেলিকপ্টার কিংবা সুউচ্চ ভবন থেকে জঙ্গিদের আস্তানায় আঘাত হানার মতো কঠোর প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রথমবারের মতো মাঠে আসছে পুলিশের কমান্ডো টিম। প্রশিক্ষিত জঙ্গিদের মোকাবেলায় এপ্রিল থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াতের সঙ্গে ‍মাঠে থাকবে কমান্ডোরাও।

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড ট্রেনিং সেন্টার থেকে ইতোমধ্যে কমান্ডো প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ৪০ জন পুলিশ সদস্য। তারা খাগড়াছড়ির গহীন অরণ্যে কঠোর প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে কমান্ডো হিসেবে গড়ে তুলেছে আরও ৪৩ জনকে। ৮ এপ্রিল প্রশিক্ষণ শেষে কমান্ডো টিমের এই সদস্যরা যুক্ত হবেন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে।

পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে খাগড়াছড়িতে কমান্ডো প্রশিক্ষণ সার্বিকভাবে মনিটরিং করছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো.শফিকুল ইসলাম।

জানতে চাইলে ডিআইজি শফিকুল বলেন, খাগড়াছড়ি সদরে আমাদের একটি স্পেশালাইজড ট্রেনিং সেন্টার আছে। সেখানে আমাদের কিছু পুলিশ সদস্যকে পুলিশের উপযোগী কিছু কমান্ডো ট্রেনিং করানো হচ্ছে।

অন্যমিডিয়া

‘কমান্ডো অভিযান পরিচালনার জন্য কি কি বিষয় দরকার, সেটা বিবেচনা করে পুলিশ সদর দফতর একটি প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করেছে। যেমন হেলিকপ্টার থেকে কিভাবে জরুরিভাবে নিচে নেমে আসবে সেটা আছে কোর্সে। দশতলা বা তারও বেশি সুউচ্চ ভবনে দ্রুত উঠে যাওয়া কিংবা দড়ি বেয়ে নেমে আসা, এগুলোরও অনুশীলনও করানো হচ্ছে। ’

‘এর আগে কিছু সদস্য ভারত ও আমেরিকা থেকেও ট্রেনিং করে এসেছে। এটা সেনাবাহিনীর মতো অত কঠিন প্রশিক্ষণ না। তারপরও পুলিশ বাহিনীর জন্য যথেষ্ট কার্যকর একটা ট্রেনিং হচ্ছে। ’ বলেন ডিআইজি

সূত্রমতে, গত বছরের ‍জানুয়ারিতে ভারতের উত্তর প্রদেশের চীন সীমান্তে ইন্দো-তিব্বতিয়ান ট্রেনিং সেন্টারে নয় সপ্তাহের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন দুজন পুলিশ সুপার। এই প্রশিক্ষণের বড় অংশই ছিল কমান্ডো কোর্স।

এরপর গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতের হরিয়ানায় ৪০ জন শুধুমাত্র কমান্ডো প্রশিক্ষণ নেন। এর মধ্যে আছেন দুজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, তিনজন এএসপি, একজন পরিদর্শক, একজন উপ-পরিদর্শক, তিনজন নায়েক ও ৩০ জন কনস্টেবল।

এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে খাগড়াছড়িতে প্রথম টিমের বেসিক কমান্ডো ট্রেনিং। এতে পুলিশের মেট্রোপলিটন ইউনিট এবং রেঞ্জের বাছাই করা সাহসী ও চৌকস সদস্যদের অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিআইজি। ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়িতে কমান্ডো কোর্সের উদ্বোধন করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।

এদিকে ভারতের টিমে প্রশিক্ষণ নেয়ার কর্মকর্তাদের একজন সিএমপির গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি-পশ্চিম) হুমায়ন কবির। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ভারতে থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফেরার পর আমাদের মধ্য থেকে একটি গ্রুপকে খাগড়াছড়িতে প্রশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

‘খাগড়াছড়িতে প্রথম টিমে এএসপি থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত ৪৩ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাদের আট সপ্তাহের বেসিক কমান্ডো ট্রেনিং শেষ হবে ৬ এপ্রিল। এরপর তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করবে। ’ বলেন এডিসি হুমায়ন

প্রথম টিমের কোর্স শেষ হওয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যে আরেকটি টিম প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছেন ডিআইজি শফিকুল।

তবে আপাতত আলাদা কমান্ডো ইউনিট কিংবা ব্যাটেলিয়ন করার পরিকল্পনা পুলিশের নেই বলে জানিয়েছেন ডিআইজি।

‘এটা আলাদা ইউনিট হবে না। বিভাগীয় শহরে বিভিন্ন ইউনিটের বিশেষ করে সোয়াতের সঙ্গে কমান্ডো টিমের সদস্যরা সংযুক্ত থাকবেন। রেঞ্জের সঙ্গেও থাকবেন। যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানে ব্যবহার হবে। একটা ট্রেনিং কোর্স শেষ হতে যাচ্ছে। আরও ট্রেনিং হবে। যদি সম্ভব হয় পরবর্তীতে হয়ত একটি ব্যাটেলিয়ন তৈরি হবে। ’ বলেন ডিআইজি

সূত্র: বাংলানিউজ, প্রতিকী ছবি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন