টেকনাফে রমজানে অপহরণ আতঙ্ক, জনতার হাতে এক অপহরণকারী আটক

fec-image

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া গ্রামে একজন অপহরণকারীকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। ১৪নং ব্রিজ এলাকা থেকে অপহরণ হওয়া রোহিঙ্গা আনাস নামে এক যুবককে ছেড়ে দিতে গিয়ে স্থানীয় জনতার হাতে সে আটক হয়। এসময় অপহৃত শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলীর নিকট অপহরণকারী ও অপহৃত আনাসকে হস্তান্তর করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

মো. আলী মেম্বার জানান, অপহৃত আনাসের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন এবং সাড়ে ৮টার দিকে তাকে ছেড়ে দিতে পাহাড় থেকে নেমে আসে অপহরণকারী। তারা ৭ জনের একটি দল ছিল। সেসময় স্থানীয় জনতার সন্দেহ হলে ধাওয়া করলে বাকিরা পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করতে সক্ষম হন জনতা। সে লেদা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা আব্দুল মুনাফ। তাকে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে, রমজান মাস শুরুর পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠছে অপহরণকারী দুর্বৃত্তরা। এই অপহরণ আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে হ্নীলা, টেকনাফ ও বাহারছড়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা। সন্ধা নামলেই বাড়ে এই আতঙ্ক। বিশেষ করে পাহাড়ি সড়কে অটোরিকশা থামিয়ে অপহরণ করা হয়। তাদের ভয়ে এলাকার মসজিদে এশা ও ফজর নামাজ আদায় করতে যাচ্ছেনা মুসল্লীরা।

সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ৩০-৩৫ জনকে অপহরণ করেছে। তারা মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে ফিরে আসে। অনেকে নিজের শেষ সম্বল বিক্রি করে মুক্তিপণ আদায় করেছেন।

মুক্তিপণ আদায় করতে অপহৃতদের বর্বর অত্যাচার ও অমানুষিক নির্যাতন চালায়। খেটে খাওয়া গরিব পরিবার থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তদের টার্গেট করে অপহরণের ঘটনা ঘটায়।

প্রতিদিন হ্নীলা, টেকনাফ ও বাহারছড়া ইউনিয়নের কোথাও না কোথাও অপহরণের ঘটনা ঘটে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপহরণের এ ঘটনা আরো বেশি। এই অপহরণকারীদের আটকে আইনশৃংখলা বাহিনীর অভিযান এখনো দেখা যায়নি। ফলে দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে তারা।

জাদিমুরা এলাকার বাসিন্দা যুব নেতা মো. ইউনুস জানান, সন্ধ্যা নামলেই আমরা এলাকাবাসী দুর্বৃত্তের আতঙ্কে থাকি। নির্ঘুম রাত কাটে।

দমদমিয়া এলাকার মাইকেল জানান, আমাদের এলাকাটি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। ইতোমধ্যে ৩-৪টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তাই আতঙ্কে আছি।
তিনি প্রশাসনের জরুরি অভিযান ও হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ দমদমিয়া থেকে তিন যুবককে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এ মাসের শুরুতে টেকনাফ স্থল বন্দরের এক ট্রাক চালক থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। গত ১১ এপ্রিল নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ৫ জনকে তুলে নিয়ে ব্যাপক মারধর ও কুপিয় জখম করে ছেড়ে দিয়েছে। এসব রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তদের দমনে এবং স্থানীয়দের জান-মালের নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি পাহাড় এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বড় ধরনের সাঁড়াশি অভিযান জরুরি বলে মনে করেন সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অপহরণ, আটক, টেকনাফ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন