টেকনাফে ২৪টি ড্রামভর্তি ১২শত অকটেন উদ্ধার

fec-image

সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে অকটেন পাচারকালে কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বরইতলী এলাকা থেকে দুই রোহিঙ্গাসহ তিনজন পাচারকারীকে আটক করেছে র‌্যাব-১৫ এর সদস্যরা। এসময় পাচারকালে ১টি ড্রাম্পার গাড়িসহ ২৪টি ড্রামে সর্বমোট ১ হাজার ২০০ লিটার অকটেন উদ্ধার করা হয়।

আটককৃত পাচারকারীরা হলেন, টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মোছনী (নয়াপাড়া, মমতাজ মিয়ার বাড়ি) এলাকার
মমতাজ মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন (৩২), নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের, (বর্তমানে ঘর-৮৮, ব্লক-সি/১২, ক্যাম্প-২৭) ব্লক-ই এর বাসিন্দা মৃত নুর আহমদের ছেলে রোহিঙ্গা শফিউল্লাহ (৩৭) ও একই ক্যাম্পের ব্লক-বি এর বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুছের ছেলে নূর হোসেন (২৪)।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, কক্সবাজারের সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও পাচারকারী জ্বালানী তৈলসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ও ঔষধ সামগ্রী অবৈধভাবে চোরাচাইপথে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার করছে। এতে করে একদিকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। একই সাথে দেশীয় উপরোল্লিখিত খাদ্যদ্রব্য, অকটেন, ডিজেল ইত্যাদি দেশ হতে অন্য দেশে পাচার হওয়ার কারণে দেশে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাচার রোধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫ জানতে পারে যে, অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের লক্ষ্যে কতিপয় চোরাকারবারী একটি ডাম্পার যোগে জ্বালানি তেল জাতীয় দ্রব্যাদি পরিবহন করে টেকনাফ থেকে কেয়ারি ঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫, সিপিসি-১ টেকনাফ ক্যাম্পের চৌকস আভিযানিক দল টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বরইতলী এলাকার বাইতুর রহমান জামে মসজিদের সামনে টেকনাফ-কক্সবাজারগামী সড়কের পাকা রাস্তার উপর চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় টেকনাফ আটক কেয়ারি ঘাটগামী ১টি ডাম্পার গাড়ি (রেজিঃ নং-চট্টমেট্রো-অ ১১-০০৭৯) চেকপোস্টের নিকটে পৌঁছালে র‌্যাবের আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টাকালে তিনজনকে করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত পাচারকারীরা তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে এবং তারা দেশের বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে অকটেন সংগ্রহ করে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের জন্য ড্রাম্পার যোগে কেয়ারি ঘাটের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে তাদের হেফাজতে থাকা ডাম্পার গাড়িসহ সর্বমোট ১ হাজার ২০০ লিটার অকটেন উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, আটককৃতরা বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে পরস্পর যোগসাজসে পাইকারি দামে ক্রয় করে থাকে। পরবর্তীতে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে চোরাইপথে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আটক এড়াতে রাতের গভীরে মজুদকৃত জ্বালানী তেল অকটেন চোরাচাইপথে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার করছিল বলে জানায়।

তিনি আরো জানান, আটককৃত পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন