তাইন্দঙে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৮টি টং ঘর পুননির্মাণে ৩ লাখ টাকা করে বরাদ্দ: এবার ডিজাইন পছন্দ হলো না উপজাতিদের

1148983_556221797768618_1234302028_n

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

গত ৩ আগস্টের তাইন্দং সহিংসতায় অগ্নিকাডে ক্ষতিগ্রস্থ ৩৫টি পাহাড়ী পরিবারসহ ৩৮ পরিবারের বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তরে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা গিয়েছিল পুড়ে যাওয়া প্রায় সকল ঘরই উপজাতীয় টং ঘর। কিছু পাকা ঘর থাকলেও সেগুলো পোড়েনি। তবু সেসকল বসত ঘর নির্মান করে দিচ্ছে সরকার। কিন্তু এবার ডিজাইন পছন্দ হচ্ছে না তাদের। তাই ফিরিয়ে দিয়েছে সরকারী প্রস্তাব।

ইতিমধ্যে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের গৃহ নির্মান সংক্রান্ত সরকারী নির্দেশনা মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের হাতে পৌছেছে। তবে আশ্রয়ন প্রকল্প হতে প্রেরিত প্ল্যান, ডিজাইন ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ীদের পছন্দ না হওয়ায় গৃহ নির্মানের কাজ শুরু করা থমকে গেছে ।  নতুন করে ডিজাইন অনুমোদন হলেই আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহ নির্মানের কাজ শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের বসত ঘর নির্মান করে দেয়া হচ্ছে। এজন্য প্রতিটি ঘর নির্মানে তিন লাখ টাকা করে সরকারী বরাদ্ধ অনুমোদন করা হয়েছে। স্মারক নং-০৩.৭০২.০১৬.০০.০০.৫১৯.২০১৩.৭০৪৩, তারিখ-২২/০৯/২০১৩ইং মুলে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক মো: জহিরুল হক স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ কথা জানানো হয়। প্রেরিত প্ল্যান, ডিজাইন ও প্রাক্কলন মোতাবেক কাজের গুনগত মান বজায় রেখে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত গৃহ নির্মানের কাজ শেষ করার জন্য বলা হয়েছে ঐ পত্রে।

জানা গেছে, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে একটি কমিটি (পিআইসি) উক্ত কাজ বাস্তবায়ন করবে। উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার কমিটির সদস্য এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজেই আয়ন-ব্যায়ন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

উল্লেখ্য যে, গত ৩ আগষ্ট মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দংয়ে মোটর সাইকেল চালক কামাল হোসেনকে অপহরনের জের ধরে তাইন্দংয়ের বগাপাড়া, স্বর্বেশ্বরপাড়া, ভগবানটিলা ও তালুকদার পাড়ায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় তাইন্দংয়ের কয়েকটি গ্রামের পাহাড়ীরা বাংলাদেশ ভারতের সীমান্তবর্তী নো-মেন্স ল্যান্ড ও পাশ্ববর্তী পানছড়ি উপজেলায় আশ্রয় নেয়। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে ও পানছড়িতে আশ্রয় নেয়া পাহাড়ীরা নিজ নিজ গ্রামে ফিরে আসে।

গত একমাসের বেশী সময় ধরে তাদেরকে নানা ধরনের সরকারী সহায়তা দেয়া হলেও তারা সরকারী সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করে আসছে বিভিন্ন মহলে। কখনো ত্রাণ নিয়েছে আবার কখনো ঠুনকো অজুহাত তুলে ফিরিয়ে দিয়েছে সরকারী ত্রাণ। সংসদীয় কমিটির ত্রাণ ‍ফিরিয়ে দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীর হাত থেকেও ত্রাণ নিতে অস্বীকার করে লিখিত চুক্তির দাবী তুলেছে। এসময় তারা সরকারীভাবে গৃহ নির্মানেরও দাবী তোলে। অবশেষে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত তাইন্দংয়ের ৩৫ টি পাহাড়ী বাড়ি সহ ৩৮ টি গৃহ নির্মানের জন্য তিন লাখ টাকা করে বরাদ্ধ প্রদান করে সরকার।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. মোহাম্মদ মাহে আলম গৃহ নির্মানে সরকারী অনুমোদনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রেরিত ডিজাইন ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ীদের পছন্দ না হওয়ায় গৃহ নির্মান শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। নতুন করে ডিজাইন পাওয়া গেলে কাজ শুরু করা হবে বলেও পার্বত্যনিউজকে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

2 Replies to “তাইন্দঙে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৮টি টং ঘর পুননির্মাণে ৩ লাখ টাকা করে বরাদ্দ: এবার ডিজাইন পছন্দ হলো না উপজাতিদের”

  1. একেই বলে চাঁন কপাল। পুড়লো কুড়ে ঘর এবার হবে পাকাবাড়ি। তাও আবার সরকারী টাকায়। সরকারী সাহায্যের ক্ষেত্রেও পাহাড়ীদের পছন্দ-অপছন্দকে প্রাধান্য দিতে হচ্ছে সরকারকে।
    সরকার কি তাদের (পাহাড়ীদের)কাছে এতোটাই অসহায় !
    ইতোমধ্যে যে সকল বাঙ্গালী পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের বেলায় তো এরকম সরকারী সহায়তা চোখে পড়েনি…

  2. তাদেরকে একটা করে বিয়ে করাইয়া দিলে ভালো হয়না ?
    সরকার কি আমার এ কথাটি ভেবে দেখবেন ?
    আমি মনে করতেছি খুব তাড়াতাড়ি তাদের সবাইকে বিয়ে করানোর উদ্যোগ নেয়া উচিৎ সরকারের ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন