জনদুর্ভোগ চরমে

থানচি-বান্দরবান সড়ক নির্মাণের দুই বছরেই মৃত্যুর ফাঁদ

fec-image

বান্দরবানের  থানচি-বান্দরবান সড়কের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি চেক পোষ্ট হতে বলিবাজার ও ২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের যাওয়ার এক মাত্র জনগুরুত্বপূর্ণ পৃথক দুই সড়কে খানা খন্দে কাঁদা মাটি ও অর্ধশতাধিক গর্ত থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের রোগী এবং বাজারগামী সাধারণ জনগণ ও ছোট বড় যাত্রীবাহী পরিবহন যাতায়াতের চরম ভৌগান্তিতে পরিনত হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দুই বছর আগেই আরসিসি ব্লক নির্মাণ করলে ও কোনো কাজে আসছে না ফলে সড়কটি নির্মাণের দুই বছর পেরুতে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ৭০ লক্ষ টাকার ব্যয়ের বান্দরবান থানচি সড়কের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি চেক পোষ্ট হতে বলিবাজার যাওয়ার রাস্তা প্রায় ৫০০ মিটার দূরত্বে সড়কটি ৪ ইঞ্চি আরসিসি (ব্লক) দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করেছিলেন ঠিকাদার বিএনপি নেতা মংশৈম্রয় মারমা।

বিজিবি চেক পোষ্ট হতে বলীবাজার, বলিবাজার উচ্চ বিদ্যালয়, বলিবাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বলিবাজার কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়ার পৃথক দুই টি সড়কের প্রবেশের ১০০০ গজ সড়কটি এখন জনদুর্ভোগের প্রতীক। টানা বৃষ্টিপাতে সড়কটি কাঁদা ও গর্তে ভরে গিয়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শত শত শিক্ষার্থী রোগী ও সাধারণ বাজার গামী মানুষ। স্থানীয়রা বলছেন, এ যেন অভিভাবকহীন সড়ক, যার দেখভালের কেউ নেই।

মঙ্গলবার ১৬ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে গেলে পৃথ দুই সড়কের অর্ধশতাধিক গর্ত, সড়কের রড উঠে গিয়েছে, বৃষ্টি পানির জমানো কাঁধা মাটি দিয়ে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা, এমনকি যাত্রীবাহী বাস যাতায়াতে দেখা গেছে।

অটোরিকশা চালক হাইহাইসিং বলেন, “আমি তিন বছর ধরে এ রাস্তায় গাড়ি চালাই। তখন থেকে এখন পর্যন্ত রাস্তাটির একই অবস্থা। আমাদের চালকদের জন্য এটা বড় ক্ষতি, যেখানে গাড়ির ব্রেইক আর বেয়ারিং দুই-তিন মাস টেকার কথা, সেখানে সপ্তাহে দু’বারও পরিবর্তন করতে হয়। এমন চরম দুর্দশা থেকে আমরা মুক্তি চাই। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. মেথোয়াই মারমা বলেন, বান্দরবান জেলা সদর থেকে যাতায়াতে যতটা কষ্ট পাই, তার দ্বিগুণ কষ্ট হয় এ বাজারে যাওয়া রাস্তায়। দ্রুত সংস্কার করলে জনসাধারণের অনেক উপকার হবে।

সড়কের পাশ্বে বাসিন্দা ঙৈনুমং মারমা ৫৫ বলেন, কাঁদা মাটি ও গর্তে ভরা ও খানা খন্দে সড়কের ছোট ছোট যাত্রীবাহী যানবহন, মোটরসাইকেল, অটোরিক্সা প্রতিদিন পিছলাইয়ে পড়ে যায় (দুর্ঘটনা) হতে দেখা যায়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা উয়ইনু মারমা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের কোমল মতি শিক্ষার্থীরা বোট জুতা পড়ে আসলে স্কুলের পৌঁছলের জুতা ধোয়ার জন্য আলাদা পানি দিতে হয়। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জুতা ধোয়া ব্যস্ত থাকবো নাকি পাঠ দানে মনোযোগ দিতে পারতেছি না।

যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বান্দরবান জেলা (এলজিইডি) সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সারোয়ার হোসেন বলেন, সড়কটি জুন মাসের পরিদর্শণ করেছি এবং পূর্বে প্রস্তুতকৃত প্রাক্কলন নতুন করে সংশোধন প্রস্তুত করে সদর দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলনের ৭ ইঞ্চি আরসিসি ঢালাই অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

আরসিসি ঢালাইতে টেকসই জন্য ১৭৫ এমএম, পরপর ১০ এমএম রড অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলনটি অনুমোদন পেলে কাজটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে এবং আর কোন ভোগান্তি হবে না। অবিলম্বে সংস্কার কাজ শুরু না হলে যে কোনো সময় বড় ধরনে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: থানচি, বান্দরবান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন