দূর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে চেয়ারম্যানের ভাইসহ আহত ২

fec-image

কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামায় দূর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাইসহ দুইজন আহত হয়েছে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

আহতরা হলেন মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমের ছোট ভাই এনায়েত উল্লাহ চৌধুরী(৩৬) ও উজানটিয়া ইউনিয়নের কপিল উদ্দিনের পুত্র ব্যবসায়ী আরাফাত উদ্দিন(৩৮)। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্মরত চিকিৎসক চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

২৪ আগস্ট (মঙ্গলবার) সকাল ৯টায় মগনামা বাজারস্থ কসাই পাড়া হয়ে ব্যাংখল ঘোনা পয়েন্টে পৌঁছালে ১০/১২ জন দূর্বত্তরা এ ঘটনা ঘটায়। স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মমতাজুল ইসলামের উপর হামলার জের ধরে এ ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মমতাজুল ইসলামের উপর কে বা কারা হামলা করেছিল তা কেউ জানেন না। কিন্তু এর দায় চেয়ারম্যানের ও তাঁর পরিবারের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে এনায়েত উল্লাহ ও আরফাত কসাই পাড়া রাস্তার মাথা সংলগ্নে পৌঁছালে দূর্বৃত্তের একটি সংঘবদ্ধ দল গতিরোধ করে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা এনায়েত ও আরাফাতকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এসময় তাদের হাতে থাকা জিনিসপত্র ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

আহত আরাফাত জানান, আমরা চেয়ারম্যানের বরফ কল থেকে রক্ষিত টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য মটর সাইকেল যোগে চকরিয়া একটি ব্যাংকে যাচ্ছিলাম। পথের মধ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের উপর হামলা করে। এসময় আমাদের কাছ থেকে নগদ ১০ লক্ষ টাকা, ব্যাংকের চেক বহি, মোবাইলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার পর পরই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ। এদিকে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মগনামার মহুরী পাড়া এলাকায় পুলিশ ও স্থানীয়দের মাঝে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এদিকে নুর মোহাম্মদ মেম্বার জানান, স্থানীয় খোকন ও সেলিম সহ বেশ কয়েকজন যুবক প্রকাশে এ হামলা করে। তারা হামলা করে পালিয়ে যায়।

মহুরী পাড়া এলাকার বেশ কয়েকজন লোক বলেন সকাল ১০টার দিকে বহিরাগত কিছু লোক মহুরীপাড়া বাজার ও এখানে এসে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।

খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উপস্থিত জনতাকে ধাওয়া করে। এসময় নেজাম উদ্দিন নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

এদিকে মহুরীপাড়ার লোকজন পুনরায় ফাঁকা গুলিবর্ষণ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেকুয়া থানা পুলিশ ও কক্সবাজার থেকে স্পেশাল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

দুপুর ১টার দিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পেকুয়া -চকরিয়ার) সার্কেল তৌফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে সকলকে অনুরোধ করেন পুলিশ সুপার। তিনি আরো বলেন কোন সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না সেই যেই দলেরই হোক না কেন আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে বিকালে স্থানীয় এলাকাবাসিরা মগনামায় সন্ত্রাস বন্ধের ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবি করে এলাকাবাসীর ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল করে।

স্থানীয় চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম বলেন, চিহ্নিত দুর্বৃত্ত মমতাজুল ইসলামের নেতৃত্বে খোরশেদুল আলম, রোকন উদ্দিন, জসিম উদ্দিনসহ ১০ থেকে ১২ জন কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে তাঁর ভাই এনায়েত উল্লাহ ও এক আত্বীয়কে হত্যার চেষ্টা চালায়। নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিরোধের জেরে তাঁরা আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ পরিকল্পিত হামলা করে। তিনি আরো বলেন আমি কিছু বলবো না এটি সম্পন্ন প্রশাসন বিচার করবে। আমি আশা করি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদেরকে আইনের আওতায় আনবে পুলিশ প্রশাসন। আমার ভাই ও আমার আত্বীয়কে কারা হামলা করেছে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে প্রশাসন।

এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। একজনকে আটক করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন