দেড়বছর পর বাড়ি ফিরেছে কথিত অপহৃত কিশোরী

চকরিয়া প্রতিনিধি :
চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ হারবাং কাটাখালী এলাকা থেকে অপহরণের দেড়বছর পর স্বেচ্ছায় বাড়ি ফিরেছেন কিশোরী নাজমা আক্তার। গত শনিবার সকালে ওই কিশোরী চট্টগ্রাম থেকে তার গ্রামের বাড়িতে এসেছে।

২০১৫ সালের ২৬ জুন ওই কিশোরী অপহরণের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগে তার মা ছুরা খাতুন চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী রুজু করেন। পরে একই বছরের ২৫ নভেম্বর চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগে একটি নালিশী মামলা করেন ছুরা খাতুন। এতে অভিযুক্ত করা হয় প্রতিবেশী শুধাংশু পাহাড় গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সোনা চন্দ্র আচার্য্যরে ছেলে সুজিত আচার্য্য, তার ভাই অজিৎ আর্চায্য, তাদের মা রাজ লক্ষী আর্চায্য সহ তিনজনকে।

বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। একই সাথে অপহরণের শিকার ওই কিশোরীকে উদ্ধারে আইনী ব্যবস্থা নিতে বলেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্ত করনে তৎকালীন হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি দেবাশীষ সরকার। তিনি বদলি হলে মামলাটির তদন্তের দায়িত্বভার নেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন কক্সবাজার ব্রাঞ্চের উপ-পরির্দশক মোহাম্মদ হাসান। বর্তমানেও মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলছে।

মামলার আসামি প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে সুজিত আচার্য্য অভিযোগ করে জানান, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল তাদের পৈতৃক বসতভিটাটি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। তাঁরা এতে র্ব্যথ হয়ে বসতভিটে থেকে তাদের পরিবারকে উচ্ছেদ করার জন্যই ওই কিশোরীকে অপহরণের কথিত ঘটনা সাজিয়ে একই এলাকার মৃত আবদুল মতলবের স্ত্রী ছুরা খাতুনকে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে তার পরিবারকে জড়িয়ে আদালতে মামলাটি করেছে।

হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার আমিনা খাতুন বলেন, মেয়েকে অপহরণের অভিযোগে তার মা ছুরা খাতুন আদালতে বাদি হয়ে মামলা করলেও দেড়বছর পর গত শনিবার সকালে ওই মেয়ে স্বেচ্ছায় বাড়িতে ফিরেছে। ঘটনাটি জানার পর আমরা পরিষদের চৌকিদার পাঠিয়ে তাকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি বলেন, মেয়েটি জানিয়েছে ঘটনার দিন তার মা ছুরা খাতুন তাকে মারধর করে। এ কারণে রাগ করে সে এক মহিলার সাথে চট্টগ্রামে পালিয়ে যায়। তাকে কেউ অপহরণ করেনি। চট্টগ্রামের একব্যক্তির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো। প্রায় ১৭ মাস সেখানে চাকুরী করার পর বাসার সকলের অগোচরে শনিবার সকালে চকরিয়ায় নিজের বাড়িতে পালিয়ে চলে আসে।

চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খাঁন বলেন, কিশোরী নাজমা আক্তার ১৭ মাস পর বাড়িতে ফিরেছে বলে তার মা ছুরা খাতুন ওই মেয়েকে নিয়ে গতকাল সোমবার থানায় এসে বলেছে। ২০১৫ সালের ২৬ জুন ওই মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে মর্মে থানায় একটি জিডি করেন তার মা। গতকাল ওই জিডিতে ফের তাকে পাওয়া যাওয়ার বিষয়টি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এব্যাপারে মামলা থাকলে তা তদন্ত সংস্থা দেখবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন