ধর্মীয় গ্রন্থের অবমাননা রোধে জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব পাস

fec-image

ধর্মীয় গ্রন্থের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি নিন্দা প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হয়েছে। তাতে এ ধরনের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল বলে উল্লেখ করা হয়।

গত মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্ধর্মীয় ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপ এবং ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রতিরোধে সহনশীলতা প্রসার’ শীর্ষক সভায় মরক্কোর উত্থাপিত খসড়া প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এতে সদস্যরাষ্ট্র ও সোশ্যাল মিডিয়া কম্পানিগুলোকে ক্রমবর্ধমান ঘৃণ্য বক্তব্যের প্রসার প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, এটি ধর্ম বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে যেকোনো ব্যক্তি, ধর্মীয় প্রতীক, পবিত্র গ্রন্থ, বাড়ি, ব্যবসা, সম্পত্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, উপাসনার স্থানের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংস কার্যক্রম নিন্দনীয়। তা ছাড়া উপাসনাস্থলের ওপর সব ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন।

অবশ্য স্পেনের প্রতিনিধি ধর্মীয় প্রতীক ও গ্রন্থের অবমাননাকে ঘৃণ্য কাজ মনে করলেও তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের শামিল নয় বলে মতামত দেন। তিনি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব জানান।

এদিকে ডেনমার্কের প্রতিনিধি যিনি ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইডেনের পক্ষ হয়ে কথা বলেন, তিনি জানান, কোরআন বা অন্য যেকোনো ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো খুবই ঘৃণ্য অসম্মানজনক কাজ। তার পক্ষে এ ধরনের কাজগুলোর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানায়। তবে তার দেশ মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতা ও ধর্মীয় বিশ্বাসের সমালোচনাকে নিষিদ্ধ করে না। তাই এসব আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের শামিল নয়।

গত ১২ জুলাই কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মীয় বিদ্বেষ রোধে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরোধিতার পরও জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে (ইউএনএইচআরসি) একটি প্রস্তাব পাস হয়। এ প্রস্তাবের পক্ষে বাংলাদেশসহ ২৮টি সদস্য দেশ ভোট দেয় এবং বিপক্ষে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১২টি দেশ। প্রস্তাবনায় কোরআনকে লক্ষ্য করে হামলার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে বলা হয় এবং এ ধরনের কার্যক্রমকে ধর্মীয় ঘৃণাচর্চা বলে আখ্যায়িত করা হয়।

সম্প্রতি সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন পোড়ানোর বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। গত ২৮ জুন ঈদুল আজহার দিন স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এক ইরাকি শরণার্থী পুলিশের নিরাপত্তায় পবিত্র কোরআনের একটি কপি পুড়িয়ে দেয়।

‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’র যুক্তি দিয়ে এ কাজের অনুমতি দেন সুইডেনের একটি আদালত। অবশ্য মুসলিম দেশগুলোর তীব্র নিন্দার মুখে ঘটনার চার দিন পর সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘটনাকে ‘ইসলামবিদ্বেষ’ আখ্যায়িত করে এর নিন্দা জানায়।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন