নাইক্ষ্যংছড়িতে করোনা আক্রান্ত রোগীর স্ত্রীসহ সংস্পর্শে আসা ১৭ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ

fec-image

নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু এলাকায় করোনাভাইরাস শনাক্ত ৫৯ বছরের বৃদ্ধ আবু ছিদ্দিকের স্ত্রীসহ সংস্পর্শ নারী-পুরুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত যাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তাদের একজন ছাড়া সকলের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টি,এস) ডা. আবু জাফর মো. ছলিম এমন তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বান্দরবানের পার্শ্ববর্তী কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা শনাক্তে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার পর থেকে আমরা উপজেলা পর্যায়ে নমুনা সংগ্রহ শুরু করি। তৎমধ্যে গত ১৬ এপ্রিল উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার আবু ছিদ্দিক নামের এক বৃদ্ধের শরীরে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। তাকে একদিন হোম কোয়ারেন্টেইনে রেখে মোবাইলে চিকিৎসা দিয়ে পরদিন ১৭ এপ্রিল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়।

তবে রিপোর্ট অনুযায়ী তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়লেও তার মধ্যে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তার পরিবারের স্ত্রীসহ সংস্পর্শ ২০ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করার কথা থাকলেও  গত ১৮ এপ্রিল শনিবার আবু ছিদ্দিকের স্ত্রীসহ তার পরিবার ও সংস্পর্শ ব্যক্তিদের নমুনা (সেম্পাল) সংগ্রহ করা হয়েছিল মাত্র ১০জনের।

পরদিন ১৯ এপ্রিল রবিবার ওই পরিবারের আরও ৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিলো। ওই পাঠানো ১৭ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ বলে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন ডা. আবু জাফর মো ছলিম।

তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত বৃদ্ধ আবু ছিদ্দিকের শরীরে করোনার উপসর্গ না থাকায় এবং স্ত্রীসহ সংস্পর্শ ব্যক্তির নমুনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় একটু স্বস্তিতে আছি। রোগী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছেন। নিয়মিত খাবার খাচ্ছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো আছে।

আইসোলেশনে থাকা ৫ দিন যাবত কোন রকম সমস্যা দেখা দেয়নি। এ আক্রান্ত রোগীর আগামী বুধ-বৃহস্পতিবার পুনরায় নমুনা সংগ্রহ করে টেস্টে পাঠানোর পর রিপোর্টের উপর নির্ভর করবে রোগীর চিকিৎসা বিষয়টি।

এদিকে চিকিৎসকদের জন্য পিপিই, মাক্স, গ্লাভস পাওয়ার পর রোগীর কাছে গিয়ে চিকিৎসা করা কোন সমস্যা হচ্ছেনা বলে জানান ডা. ছলিম।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, করোনা সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফ্লু কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। এখানে একজন মেডিকেল অফিসার মূল দায়িত্বে রয়েছেন। ফ্লু কর্নারে যেসব রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন তাদের উপসর্গ ও করোনা সন্দেহভাজন হিসেবে ফ্লু কর্নারের দায়িত্বরত চিকিৎসকই নির্ধারণ করেন কোন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করতে হবে।

মূলত: গলা এবং নাক থেকে দুই ধরণের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা সংগ্রহের পরে তা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা সংক্রান্ত পিসিআর ল্যাবে টেস্টের জন্য পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত যাদের নমুনা পাঠানো হয়েছিলো তার মধ্যে এক জনের করোনা ভাইরাস পজেটিভ রিপোর্ট আসলেও অন্যান্যদের সকলের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহের কোন সীমাবদ্ধতা আছে কিনা অথবা রিপোর্ট পাওয়ার পর রোগীদের কি ধরণের সনদ প্রদান করা হচ্ছে এমন প্রসঙ্গে ফ্লু কর্নারে দায়িত্বরত
ডা. অ‌ভি‌জিত চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, নমুনা সংগ্রহের ব্যাপারে কোন সীমাবদ্ধতা নেই। তবে ফ্লু কর্নারের দায়িত্বরত চিকিৎসকই নির্ধারণ করেন কোন ধরণের রোগীর নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। আর আপাতত এই মুহুর্তে রোগীদের রিপোর্টের ব্যাপারে তেমন কোন সনদ বা প্রত্যয়ন প্রদান করা হচ্ছে না।

তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে । আশা করছি অচিরেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশ ও ফ্লু কর্নার ইউনিট খোলার পর সন্দেহভাজন ব্যক্তির এই পর্যন্ত মোট ৮০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার মধ্যে একজন করোনা পজেটিভ আইসোলেশনে রয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস, নাইক্ষ্যংছড়ি, পিসিআর ল্যাব
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন