নাইক্ষ্যংছড়িতে সিএনজি শ্রমিকদের ধর্মঘট ৭ ঘন্টা পর স্থগিত, চরম দুর্ভোগে যাত্রী

fec-image

নাইক্ষ্যংছড়ি-রামু সড়কে ডাকা ধর্মঘট প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ৭ ঘন্টা পর স্থগিত করেছে সিএনজি শ্রমিকরা।

রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে এ সিদ্ধান্ত দেন ধর্মঘট ডাকা শ্রমিকদের। একই সাথে ৭ ঘন্টা ধরে চরম দুর্ভোগে থাকা যাত্রীদের কষ্ট লাঘব করেন তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাইক্ষ্যংছড়ি থাকার অফিসার ইনচার্জ টানটু সাহা।

একাধিক যাত্রী ও শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ রোববার (১৮ ডিসেম্বর) পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে এ সড়কে ধর্মঘটের ডাক দেয় রামু সিএনজি সংগঠনের শ্রমিকরা। তারা রোববার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সড়কটি মহিষকুম, কাউয়াখোপ, মুরারকাছা, তুলাতলী চা বাগান ও রামু চৌমুহনীতে ৬টি স্থানে অবস্থান করে বন্ধ করে দেয় গাড়ি চলাচল।

তাদের দাবি এ সড়ক তাদের। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় অন্য কোন সংগঠন সিএনজি লাইন পরিচালনা করতে পারবে না। এ জন্যে ধর্মঘটের ডাক দেন তারা। ফলে বিপাকে পড়েন নাইক্ষ্যংছড়ি, কচ্ছপিয়া, দোছড়ি, গর্জনিয়া ও বাইশারীর ইউনিয়নের ২ লাখ সাধারণ যাত্রী । বিশেষ করে ভোগান্তি শিকার হয়েছে অসুস্থ রোগী ও শিশুসহ মহিলা যাত্রীরা।

গর্জনিয়া ইউনিয়নের রেহেনা আক্তার জানান, তার অসুস্থ মাকে নিয়ে সে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পথে তার গাড়িটি আটকে দেয় সিএনজি রামুর শ্রমিকরা। যাতে তার মায়ের অবস্থা ছিলো প্রাণ যায় যায় অবস্থা।

দোছড়ি ইউনিয়নের মীর আহমদ জানান, তার ছোট বোনের ডেলিভারি সংকটের টাকা নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। চাকঢালার ফরিদ আহামদ ও সদরের জয়নালসহ অনেকে বলেন, অনেকের মামলাসহ বিভিন্ন জরুরি প্রয়োজনীয় কাজে যেতে পারেনি তারা। এভাবে প্রতিটি যাত্রী জরুরি কাজ নিয়ে যাত্রাকালে বাধার সৃষ্টির হয় সিএনজি চালকদের।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন জানান, তারা বান্দরবানের রেজি. ১৯০১ নং সাংগঠনিক শাখার অধীনে পরিচালিত। তারা শুধু মাত্র নাইক্ষ্যংছড়িতে লাইনম্যান দিয়ে তাদের গাড়িগুলো পরিচালনা করে আসছিলো। তারা আরো জানান, তাদের শাখা বৈধ হওয়ার পরও রামু শাখার শ্রমিকরা অবৈধভাবে প্রভাব খাটিয়ে নাইক্ষ্যংছড়িতে লাইনম্যান বসিয়ে অবৈধ চাঁদা আদায় করতে চায় বার বার। এতে সাধারণ শ্রমিকরা সাড়া না দেয়ায় কতেক শ্রমিক মিলে ধর্মঘটের নামে হাজার হাজার যাত্রীকে জিম্মি করে ফেলে রোববার। যা আইনত অবৈধ। সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড।

তারা অভিযোগ করেন, রামুর এ নেতারা তাদের ২০টি গাড়ি আটকেও রাখে এ সময় ।

অপর দিকে রামু শ্রমিক নেতা ফরিদুল আলম ও আলী হোছন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা বৈধ পন্থায় এ ধর্মঘট ডাকে। তাদের দাবি আদায়ের জন্যে।

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি টান্টু সাহা জানান, আমি বিষয়টি অবহিত হওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে যাই। উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির এ দু’উপজেলার প্রশাসনের মাধ্যমে তা সমাধানের আশ্বাস দেয়ার পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন ধর্মঘট ডাকা শ্রমিকরা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ধর্মঘট, নাইক্ষ্যংছড়ি, যাত্রী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন