নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবিকে বিতর্কিত করতে মরিয়া চোরাকারবারিরা

fec-image

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে গরু চোরাকারবারি ও কিছু কুচক্রী মহল বিজিবিকে বিতর্কিত করতে সচেষ্ট হয়েছে। তাদের এই ধরনের চক্রান্তের মূল উদ্দেশ্য যাতে সীমান্তে বিজিবির অভিযান বন্ধ হয়ে যায়।

চোরাকারবারিরা সীমান্ত জুড়ে রাত জেগে পাহারা বসিয়ে বিজিবিকে নজরদারী করতেও সচেষ্ট আছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে সীমান্তে মিয়ানমারের সশস্ত্র দু’পক্ষের গোলাগুলির ফলে সীমান্ত উত্তেজনা শুরু হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গবাদি পশু চোরাকারবারিরা সীমান্তে তৎপরতা বাড়িয়ে। তারা সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে গরু, মহিষসহ অন্যান্য চোরাই পণ্য পাচার শুরু করে। তখন নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে চোরাকারবারির সংখ্যা ছিলো হাতেগোনা।

সীমান্তে বসবাসরত নুরুল আলম সওদাগর জানান, শুরুর দিকে গরু-মহিষ চোরাকারবারির সংখ্যা ছিলো ৫০-৬০ জন। আর মিযানমার থেকে গরু-মহিষ পাচারের শ্রমিকের সংখ্যা ছিলো শতাধিক। এখন এর সংখ্যা অনেক বেশি। হাজার ছাড়িয়েছে। যার এক তৃতীয়াংশ প্রভাশালী বাকিরা পুরো সময়ের গরু টানা শ্রমিক। বলতে গেলে এখন নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু সীমান্তের পাহাড়ি এলাকার কয়েকটি পয়েন্টে ঘরে ঘরে গরু ব্যবসায়ী। যারা নানা কৌশলে বৈধতার ভুয়া কাগজ দেখিয়ে গরু পাচার কাজে সক্রিয়।

বিজিবি সূত্রগুলো জানান, এ পর্যায়ে ১১-বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এ সীমান্ত পয়েন্ট ও চিহ্নিত গ্রামের অলিতে গলিতে চোরাকারবারিরা রাতজেগে পাহারা দিয়ে থাকে। সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ি জনপদ ৪৭ পিলার নিকটবর্তী বামহাতিরছড়া গবাদি-পশুসহ চোরাকারবারিদের ধরতে গিয়ে বন্যহাতির কবলে পড়ে ১১-বিজিবি ভাল্লুকখাইয়া ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুল মান্নান নামের একজন নিহত হন।

এদিকে সীমান্তের জামছড়ি, ফুলতলী, বিছামারা ও কম্বনিয়া গ্রামের বাসিন্দা জাকের আহমদ, নজির আহমদ, সরওয়ার কামাল ও ফরিদু আলম এ প্রতিবেদককে জানান, গত কয়েক মাসে ১১-বিজিবির সদস্যরা বাংলাদেশের বড় বাজার সমূহে পাচারকালে মিয়ানমারের অনেক গরু জব্দ করেছে। যে অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।

তারা আক্ষেপ করে জানান, বিজিবির জব্দ করা এসব পশু ছাড়িয়ে নিতে কারবারিরা ভুয়া ট্যাক্স-টোল মেমো দেখিয়ে বিজিবিকে ফাঁকি দিতে মরিয়া বলেও অভিযোগ উঠেছে।

১১ বিজিবি জোন কমান্ডার ও লে. কর্নেল মো. রেজাউল করিম বলেন, মূলত সীমান্তে চোরাকারবারি বন্ধের উপক্রম হওয়ায় তারা এখন বিজিবির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যাতে অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বিজিবির অভিযান চলছে এবং অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরো জানান, এ চোরাচালানের সাথে জড়িতরা সীমান্তের হাট-বাজার সমূহের ইজারাদারদের কাছ থেকে কৌশলে টোল- ট্যাক্সের রশিদ নিয়ে নির্বিঘ্নে গবাদি পশু পাচার চেষ্টা করলেও বিজিবি তা প্রতিহত করে আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ফলে গত ৩ মাসে পৌনে ৪ কোটি টাকার অধিক গবাদি পশু জব্দ করা হয়েছে। কারো অপপ্রচারে বিজিবি অভিযান বন্ধ করবে না বলেও জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন