নাচে-গানে উৎসবমুখর পরিবেশে খাসিয়াদের বর্ষবরণ


নাচে-গানে, রঙিন পোশাকে ও উৎসবমুখর পরিবেশে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে উদযাপিত হলো খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণ উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’। ১২৬তম বর্ষকে বিদায় জানিয়ে ১২৭তম বর্ষকে বরণ করে নিল খাসিয়া জনগোষ্ঠী।
২২ নভেম্বর দুপুরের পর কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান (খাসিয়া ভাষায় ‘খাসি সেং কুটস্নেম’) অনুষ্ঠিত হয়।
উৎসবে ছিল ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, দলীয় নৃত্য ও প্রার্থনা। পাহাড়ি বাঁশের সুরে আর পায়ের ছন্দে ছড়িয়ে পড়ে আত্মপরিচয়ের আবেগ।
বাঙালি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবটি বর্ণিল মিলনমেলায় রূপ নেয়।
খাসিয়া সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাকে পরিবেশন করেন প্রাচীন পাহাড়ি নৃত্য। জুম চাষ, জীবিকার নানা কৌশল ও তাদের দৈনন্দিন জীবনের বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে নৃত্যের তালে-তালে। বাদ্যযন্ত্রের ছন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো পুঞ্জি।
উৎসবকে কেন্দ্র করে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল আয়োজন করে মাছ শিকার প্রতিযোগিতা, ঐতিহ্যবাহী খেলা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এছাড়াও ঐতিহ্যবাহী খাবার খেয়ে তারা আনন্দ ফুর্তি করে নিজেদের সামাজিক সম্পর্কে সুদৃঢ় করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হন তারা।
খাসিয়া জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘সেং কুটস্নেম’ বা বর্ষবিদায় খাসিয়াদের সর্বজনীন একটি উৎসব। প্রতিবছরের মতো এবারও কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া পুঞ্জির খেলার মাঠে নানা সমাহারে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এদিন বর্ষবিদায় দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় তারা।
লাউয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জির বাসিন্দা হেলোনা বলেন, আমরা এই উৎসবের অপেক্ষায় থাকি। উৎসবে আমাদের জনগোষ্ঠীর লোকজন একত্র হই। সবার সঙ্গে সবার দেখা হয়। আমরা অনেক আনন্দ করি।
খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সাজু মারছিয়াং বলেন, খাসিয়া জনগোষ্ঠীর বর্ণিল সংস্কৃতির সৌরভ বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ার আহ্বান নিয়ে ঐতিহ্যবাহী ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উৎসব পালিত হয়।
খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি ও মাগুরছড়াপুঞ্জির হেডম্যান জিডিসন প্রধান সুচিয়াং বলেন, আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতি বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়েই আমরা ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উৎসব পালন করি।
















