পানছড়িতে জনচলাচলের রাস্তা বন্ধ করল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ

fec-image

এডিবির টাকায় জনচলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র (আলিম) মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। মাদ্রাসা কর্তপক্ষের এমন শিশু সুলভ আচরণে জনমনে যেমনি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া আফরোজ ও উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবদুল খালেকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি ফিরেছে স্বাভাবিক অবস্থায়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র (আলিম) মাদ্রাসার পিছনেই কলাবাগান এলাকায় প্রায় বিশটির অধিক পরিবারের বসবাস। সরকারীভাবে নির্মিত রাস্তা দিয়েই যুগ যুগ ধরে মানুষের চলাচল। এই এলাকায় লজিং মাষ্টার থেকেই পানছড়ি মাদ্রাসার বহু শিক্ষক তাদের চাকুরী জীবনের বেশীরভাগ সময় পার করেছে। এলাকাবাসীর দাবী বিগত ২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসা গড়ার মুল কারিগর ও সকলের আস্থাভাজন সাবেক অধ্যক্ষ মরহুম মাওলানা মো. জাকির হোসাইনের মৃত্যুর পরেই প্রতিষ্ঠানে নেমে আসে চরম দুর্গতি।

লেখাপড়ায় অবনতি, এবতেদায়ী শাখায় শিক্ষার্থী সংকট, বছরের পর বছর ধরে অডিট না করা, নিজেদের পছন্দের লোক দিয়ে পকেট কমিটি গঠন, রাতের আধারে প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ চুরি হলেও থানায় জিডি না করা, মাদ্রাসার পুকুর ও নারিকেল গাছ লিজ না দিয়ে নিজেদের মাঝে ভাগাভাগি করা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এরই মাঝে জনসাধারনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আবারও আলোচনার শীর্ষে।

এলাকার বাসিন্দা এবং মাদ্রাসা শিক্ষক নুরুল আমিন মজুমদার জানান, অনেক আকুতি-মিনতির পরও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আমার কথায় কর্ণপাত না করে গত ৩’জুন ইটের দেয়াল দিয়ে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। আমরা এ ব্যাপারে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ইউএনও বরাবর যৌথ-স্বাক্ষরে আবেদন করেছি।

এলাকার আবদুল কাদির ও বয়োবৃদ্ধ রাবেয়া খাতুনসহ (৭৩) অনেকেই জানান, এলাকাবাসীর সাথে কোন সমন্বয় বা নৌটিশ না করে হুট করে কিভাবে রাস্তাটি বন্ধ করে দিল। মাদ্রাসার সাবেক সুপার মারা যাওয়ার পর অধ্যক্ষ নিয়োগ না দিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত হয়ে তিনি বিধি-বহির্ভূতভাবে পদটি ধরে রেখেছেন।

তারা আরও জানান, ইউএনও ও উপজেলা প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে রাস্তাটি পুনরায় চালু হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো.আবদুল খালেক জানান, রাস্তা বন্ধ করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কাজটা ঠিক করেনি। তাদের বলেছি এলাকাবাসীর সাথে আলোচনা করে আসার জন্য। মাদ্রাস কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নিলে দেয়ালটি ভেঙ্গে চলাচলের রাস্তা শতভাগ উম্মক্ত করা হবে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম জানান, এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর সাথে বসে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এলাকাবাসী ও অভিভাকদের দাবী গত

৪/৫ মাস আগে নাকি মাদ্রাসার কমিটি গঠিত হয়েছে। যা শিক্ষার্থী অভিভাবক জানে না। যাদের কমিটিতে রাখা হয়েছে তাদের কোন ছেলে-মেয়েও মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করে না।

তারা আরও জানান, পকেট কমিটি বাদ দিয়ে অভিভাবকদের নিয়ে আলোচনা সভা করে নতুনভাবে কমিটি গঠন করা না হলে আইনী আশ্রয় নেয়া হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান সবাই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন