পানছড়িতে বেড়েছে বাল্য বিবাহ

বাল্য বিবাহ

শাহজাহান কবির সাজু:
খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে দিন দিন বেড়ে চলেছে বাল্য বিবাহের প্রবণতা। কিশোর কিশোরী নিয়ে নানান মেলার আয়োজন থাকলেও অত্র উপজেলায় বাল্য বিবাহ বিষয়ক কোন ধরণের সচেতনতামূলক সেমিনার নেই দীর্ঘবছর। সচেতনতার অভাবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের অভিভাবকদের মাঝে আজো লেগে আছে অন্ধকারের ছোয়া। তাদের ধারণা ৫ম শ্রেণী পাশ করলেই মেয়েরা ঘরের বোঝা।

প্রতি বছর শীতের আগমনী বার্তা লগ্নেই অভিভাবকরা হয়ে উঠে দিশেহারা। বিশেষ করে ৫ম থেকে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়ারাই এ মৌসুমে অভিভাবকদের বোঝার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন বে-সরকারী সংস্থা কাগজে কলমে বাল্য বিবাহ নিয়ে কাজ করলেও বাস্তবে তারা এ নিয়ে কোন ভূমিকা রেখেছেন এ ধরণের নজির অন্ত:ত পানছড়িতে নেই।

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন সিদ্দিক, অফিসার ইনচার্জ মো: আ: জব্বারসহ এলাকার দু’একজন সংবাদকর্মী গত এক মাসে প্রায় ৬/৭টি বাল্য বিবাহ নিয়ে কাজ করেছেন। যার মাঝে সফলতাও অনেক। কেউ কেউ পানছড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে চুপিসারে বিবাহের কাজ সেরে নিলে তাদেরও আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলার হাসাননগর গ্রামের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী হাজেরা ইতোমধ্যে বাল্য বিবাহের বলী হয়েছেন। আইয়ুব নগর গ্রামের অটোচালক রবিউল (মনাইয়া)’র সাথে তার বিয়ে হয়। একি গ্রামের ফরিদ মিয়ার ১৪ বছর বয়সী মেয়ে কুলসুমারও একই পরিণতি।

অবশ্য সংবাদকর্মী ও উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হস্তক্ষেপে বাল্য বিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে দমদম গ্রামের খলিল মিয়ার ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে রুমি আক্তার। ফাতেমানগর গ্রামের মোটরসাইকেল চালকের সাথে তার বিয়ের কথাবার্তা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল। তাছাড়া আরো অনেক বাবা-মা রয়েছে একটুখানি সুযোগের অপেক্ষায়। ফাঁক পেলেই যখন তখন কাজ সেরে নেয়ার অপেক্ষার প্রহর গুনছে তারা।

অত্র উপজেলায় নেই একজন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন সিদ্দিক জানান, পানছড়িতে বাল্য বিবাহ হতে দেয়া যাবেনা। এরি মাঝে কয়েক অভিভাবককে নোটিশ করে এনে জরিমানা ও মুচলেকা নিয়ে সাজা প্রদান করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসী ও সচেতন মহল তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে বাল্য বিবাহ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি হবে বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন