পার্বত্যনিউজে সংবাদ প্রকাশের পর পেকুয়ায় বাল্যবিয়ে পন্ড করলেন ইউএনও

news_img

স্টাফ রিপোর্টার:
পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের সবজিবন পাড়া গ্রামের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীর বাল্য বিয়ে পন্ড করে
দিলেন প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুর ১ টার দিকে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খাঁন।

মোচ্ছাম্মৎ নাছিমা আকতার মনি(১৪) স্থানীয় মো. হোছাইনের মেয়ে ও ফাঁশিয়াখালী ফাজিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী।

‘পেকুয়ায় বাল্য বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছে ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী মনি’ শিরোনামে অনলাইন পত্রিকা পার্বত্যনিউজ তথ্য বহুল সংবাদ পরিবেশন করলে টনক নড়ে উপজেলা প্রশাসনের। মঙ্গলবার দুপুর একটার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খাঁন এবং পেকুয়া থানার এস আই প্রদীপের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মেয়ের বিয়ে বাড়িতে অভিযানে যান।

ইউএনও মেহেদীর জন্য তৈরী করা মঞ্চ এবং সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নিমার্ণ করা বিভিন্ন ধরণের তোরণ গুড়িয়ে দেন। পরে বাড়িতে কাউকে না পেয়ে মেয়ের ভাই মনছুর আলমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মেয়ের পরিবার এবং নিকাহ রেজিস্টারকে নিয়ে ইউএনও কার্যালয়ে বৈঠক চলছে।

আজ বুধবার মনির বিয়ের ধার্যকৃত তারিখে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে মনির পরিবারকে সাজা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। ইউএনও’র হস্তক্ষেপের কারণে মনি বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে। সে খুব মেধাবী এবং পড়ালেখায় ভালো বলে স্কুল সূত্রে জানা গেছে। পড়ালেখা করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার তার দারুণ ইচ্ছে রয়েছে। কিন্তু সেই ইচ্ছে পূরণ করতে দিচ্ছেনা তার পিতা-মাতাসহ পরিবারের লোকজন। মনিকে তারা অপ্রাপ্ত বয়সে বাল্য বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য করেছে ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একই ইউনিয়নের বুধা মাঝির ঘোনা গ্রামের জনৈক আবদুল মালেকের সাথে মনির বিয়ের জন্য মঙ্গলবার মেহেদী সন্ধ্যা এবং বুধবার তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য আগে থেকে দিনক্ষণ ঠিক করলেও সেই আশা ব্যর্থ করলেন ইউএনও। স্বচ্ছল পাত্র পাওয়ায় হাতছাড়া করেনি মেয়ের পরিবার। তাই খুব চুপিসারেই গত ১৭ সেপ্টেম্বর মেয়ের বাড়িতে পাত্রসহ তার পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে বারবাকিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্টার কাজী মৌলনা মো. শোয়াইববে মোটা অংকে ম্যানেজ করে বাল্য বিয়ে নিবন্ধন করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে ! অভিযোগের ব্যাপারে বোববার ৭টা ৪৯ মিনিটে কাজী শোয়াইবের মোবাইলে ফোন করে বক্তব্য নেওয়া জন্য চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়ের পরিবার পরিষদের ভুয়া জন্ম নিবন্ধন তৈরী করে কাজী শোয়াইবকে সরবরাহ করেছে। আর তিনি ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীর বয়স যাচাই-বাছাই না করে বাল্য বিয়ে নিবন্ধন করায় স্থানীয়রা মেয়ের পিতা, পাত্র ও কাজীর বিরুদ্ধে বাল্য বিয়ে নিরোধ আইনে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর পেকুয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার মাধ্যমে পেকুয়ার ইউএনওর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ‘বাল্য বিয়েটি বন্ধ করা হয়েছে। এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন