মার্কিন দূতের শাহীনবাগ যাওয়া ঢাকার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল : রুশ মুখপাত্র

বাংলাদেশকে মাঝে রেখে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার উত্তাপ বাড়ছে

fec-image

বাংলাদেশে কূটনীতিকদের কার্যক্রম নিয়ে পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ঢাকায় রাশিয়া দূতাবাসের বিবৃতি, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের টুইট এবং রাশিয়া দূতাবাসের পাল্টা টুইটের পর এবার এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।

ঢাকায় গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি অবস্থান বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিষয়টি তুলে মস্কোয় বসে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।

শাহীনবাগে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নিখোঁজ এক নেতার পরিবারের সাথে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের দেখা করতে যাওয়ার সমালোচনা করে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ‘শাহীনবাগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সফরকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বলে মনে করে রাশিয়া।’

মারিয়া জাখারোভা গত বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের চেষ্টা’ শিরোনামে রুশ ভাষায় একটি বিবৃতি দেন। বিবৃতির ইংরেজি সংস্করণ গতকাল রোববার ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে মারিয়া জাখারোভা বলেন, বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা ঘিরে ব্যাপকভাবে প্রচারিত ঘটনাটি মস্কো লক্ষ্য করেছে। রাষ্ট্রদূত ২০১৩ সালে নিখোঁজ বিরোধী দলের এক নেতার পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে অন্য একটি সংগঠনের লোকজনের কারণে তার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। সংগঠনটির লোকজন রাষ্ট্রদূতের সেখানে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন না।

মুখপাত্র বলেন, ঘটনাটি মার্কিন কূটনীতিকের তৎপরতার প্রত্যাশিত ফল। তিনি বাংলাদেশের নাগরিকদের মানবাধিকার সুরক্ষার নামে ক্রমাগত দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের পাশাপাশি ব্রিটেন ও জার্মান কূটনৈতিক মিশনের সহকর্মীরা একই লক্ষ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার বিষয়ে খোলামেলাভাবে বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বিশ্বাস করি, সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করে, এমন পদক্ষেপগুলো মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

মারিয়া জাখারোভো প্রশ্ন করেন, ‘কেউ যদি জানতে চান, কূটনীতিক, দায়মুক্তি, দূতাবাস, নিরাপত্তা- শব্দগুলো কেমন হবে? আমরা সব সময় আন্তর্জাতিক আইন, কূটনৈতিক ও কনসুলার সম্পর্কিত ভিয়েনা সনদ অনুযায়ী এসব বিষয় অনুসরণের আহ্বান জানাই। এটিই মূলনীতি, এটিই সত্য। আমরা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অন্যান্য দেশকে শুধু তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই যত্নবান ও মন্তব্য করার জন্য বলব না, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বিভিন্ন দেশ ও তাদের প্রতিনিধিরা যখন তাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে, তখন তাদের সহকর্মীদের সমর্থন করার আহ্বান জানাবো।’

বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সমালোচনা করে মুখপাত্র বলেন, বিভিন্ন দেশে দূতাবাস, কনসুলেট জেনারেল, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের ওপর যখন সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে অথবা তারা হুমকি পাচ্ছে, তখন এটি যুক্তরাষ্ট্র দেখতে বা শুনতে চায় না। এতে তাদের যেন কিছু আসে-যায় না। বড়জোর তারা নীরব থাকে। আর সবচেয়ে খারাপ দিকটি হলো, তারা ঘটনাগুলোর পক্ষে যুক্তি দাঁড় করায়। যখন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীরা সিরিয়ায় রুশ দূতাবাসের বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা চালিয়েছিল, তখন আমরা জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু রাশিয়ার প্রস্তাবকে ওয়াশিংটন সমর্থন করেনি।

মারিয়া জাখারোভার বিবৃতিতে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, ব্রিটেনের বার্ষিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বিষয়ক প্রতিবেদন, আফগানিস্তানে ব্রিটেনের সেনাবাহিনীর অপরাধের তদন্তসহ অন্যান্য বিষয় উঠে আসে। এর আগে গত বুধবার গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে পশ্চিমা কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অগ্রহণযোগ্যতা এবং তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা সম্পর্কিত ১৯৬৫ সালের জাতিসঙ্ঘের ঘোষণা অনুসারে, কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক- যাই হোক না কেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করার অধিকার অন্য কোনো রাষ্ট্রের নেই। দুর্ভাগ্যবশত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হস্তক্ষেপ না করার নীতি লঙ্ঘনের সমস্যাটি বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কারণ অনেকে বিশ্বাস করে যে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থে ওই নীতি লঙ্ঘন করতে পারে। এতে বলা হয়, নিজেদের ‘উন্নত গণতন্ত্র’ বলে দাবি করা দেশগুলোর মধ্যে আধিপত্যবাদী উচ্চাকাক্সক্ষাগুলো সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। তারা শুধু সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপই করে না, বরং নির্লজ্জ প্রতারণা, অবৈধ বিধিনিষেধ ইত্যাদিও অবলম্বন করে। ফলে বিশ্বের অনেক দেশের সার্বভৌমত্ব ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

রুশ দূতাবাসের এই বিবৃতিকে সমর্থন করে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ পরদিন সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, বিদেশী কূটনীতিকদের ভিয়েনা সনদ মেনে চলা উচিত। রাশিয়ার দূতাবাস থেকে যে বিবৃতিটা দেয়া হয়েছে সেখানে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে। কিছু দেশ যখন কোনো সরকারকে চাপে রাখার চেষ্টা করে, তখন তারা সংশ্লিষ্ট দেশে মানবাধিকারের ধুয়া তোলে। অথচ দেখা যায়, তাদের নিজেদের দেশেই মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশের রাজনৈতিক বিষয়গুলো একেবারেই অভ্যন্তরীণ। এসব বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার বিষয়টি রাশিয়ার বিবৃতিতে উঠে এসেছে। আমি মনে করি, যারা ভিয়েনা সনদ লঙ্ঘন করে নানা ধরনের কথাবার্তা বলছিলেন, এই বিবৃতি তাদের বোধোদয় হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

প্রসঙ্গত, বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমন ২০১৩ সাল থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তার পরিবারের দাবি, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সুমনকে তুলে নিয়ে গেছে। সুমনের বোন ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠনের আহ্বায়ক, যারা গুমের ঘটনাগুলোর বিচার চেয়ে আসছে। গত ১৪ ডিসেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুমনদের বাড়ি যান। এ সময় বাড়ির বাইরে ‘মায়ের কান্না’ ব্যানারে আরেকটি সংগঠনের লোকজন দাঁড়িয়ে ছিল। ১৯৭৭ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আমলে সামরিক অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কোর্ট মার্শালের শিকার ব্যক্তিদের জন্য যথাযথ বিচারের দাবি জানিয়ে আসছে ‘মায়ের কান্না’। মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুমনদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথে ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা তাকে ঘিরে একটি স্মারকলিপি দেয়ার চেষ্টা করে। রাষ্ট্রদূত দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনের সাথে দেখা করে ঘটনার ব্যাপারে তার উদ্বেগের কথা জানান।

পরদিন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের সাথে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লুর বৈঠক হয়। বৈঠকে শাহীনবাগের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূততে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। ঘটনার পর পিটার হাসের নিরাপত্তা নিয়ে ওয়াশিংটনের উদ্বেগের কথা ঢাকাকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে। বৈঠকে মোহাম্মদ ইমরান ঘটনার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্য তুলে ধরেন। একই সাথে রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তায় সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার নিশ্চয়তা দেন।

গত ২২ ডিসেম্বর মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যানের সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের টেলিফোন আলাপেও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। ফোনালাপে শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের প্রকাশ্যে বিবৃতি দেয়ার আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে বুঝতে হবে।

মূলত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে গত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে অবস্থিত ১৫টি দেশের মিশন প্রধানদের এক যৌথ বিবৃতি দেয়ার পর ভিয়েনা সনদ অনুযায়ী কূটনৈতিক শিষ্টাচার মানা নিয়ে সরকার বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আমরা মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়ন উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের মৌলিক ভূমিকাকে তুলে ধরতে চাই। আমরা মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রে সংরক্ষিত স্বাধীনতা উদযাপন করি। ঘোষণাপত্রে বর্ণিত বিভিন্ন অঙ্গীকারের মধ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও নির্বাচন বিষয়ে জাতিসঙ্ঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের অঙ্গীকার রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরি। অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ, সমতা, নিরাপত্তা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনুসরণীয় মূল্যবোধ ও নীতি হিসেবে আমরা গণতান্ত্রিক শাসনকে সমর্থন ও উৎসাহিত করি।’ এতে বলা হয়, ‘আমরা বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে এ দেশের সাফল্যকে আরো উৎসাহিত করতে আগ্রহী। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করছি।’

যৌথভাবে বিবৃতি দেয়া মিশনগুলোর মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড।

এরপর ১১ ডিসেম্বর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ‘মানবাধিকার উন্নয়ন ও সুরক্ষা : বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট’ বিষয়ক এক সেমিনারে বিবৃতিদাতা কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কঠোর ভাষায় বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি ঢাকার ১৫টি কূটনৈতিক মিশনের যৌথ বিবৃতি আমাদের নজরে এসেছে। বাংলাদেশ বাইরের কোনো চাপের কাছে মাথানত করবে না। বাংলাদেশ সরকারের ক্ষমতার উৎস এ দেশের জনগণ। জনগণই নির্ধারণ করবে কে এ জাতিকে শাসন করবে। কোনো বাহ্যিক শক্তি বা কোনো অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র এটি নির্ধারণ করতে পারবে না। তিনি বলেন, আমি ঢাকার বিদেশী মিশনগুলোকে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাব। আমি বলতে চাই, কারো দিকে আঙুল তোলার আগে নিজেদের আয়নায় দেখে নিন। বাংলাদেশ সরকার বিদেশী অতিথিদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে আন্তরিক।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রাজনীতি, মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন প্রশ্নে পশ্চিমা দেশগুলো বরাবরই সরব। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি রোধে তারা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে বিভিন্ন রকম সুপারিশ তুলে ধরছেন। এটিকে চাপ মনে করে প্রায়ই বিরক্তি প্রকাশ করা হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে। পশ্চিমাদের এমন কাজকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘হস্তক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে গত সপ্তাহে স্বপ্রণোদিত বিবৃতি দিয়েছে ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাস। এবার মস্কোর মুখপাত্র প্রেস ব্রিফিং করে ঢাকায় মার্কিন দূতের সাথে ঘটে যাওয়া অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাকে সামনে এনে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝাড়লেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন