বানদরবানে ডেইলি স্টার প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে পুণরায় মামলা দায়ের
ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রতিবেদক সঞ্জয় কুমার বড়ুয়াকে আসামী করে বান্দরবান জেলা জজ কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের বান্দরবান জেলা শাখার আহবায়ক মোঃ মিজানুর রহমান আকন্দ। প্রতিবেদক তার রিপোর্টে
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান বিরোধী ‘Indigenous’ বা ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার করায় বাদী সংক্ষুদ্ধ হয়ে এ মামলা দায়ের করেছে। মামলা নম্বর সি আর ৭০/২০১৯।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আদালত এ মামলা গ্রহণ করে আগামী ২ অক্টোবর শুনানীর দিন ধার্য করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই প্রকাশিত একটি রিপোর্টের ভিত্তিতে উক্ত রিপোর্টারের বিরুদ্ধে প্রথমে বান্দরবানে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টে মামলা করেন মো. ইব্রাহীম নামের এক ব্যক্তি। একই কারণে খাগড়াছড়িতে ১৯ আগস্ট মামলা দায়ের করেন জেলা সদর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসএম মাসুম রানা।
তবে বান্দরবানে মো. ইব্রাহীমের দায়ের করা মামলা ২৯ আগস্ট সিনিয়র জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসান খারিজ করে দেয়। মামলার পক্ষে অকাট্য যুক্তি না থাকার কথা বলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার আদিবাসী শব্দ ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করে থাকে। কিন্তু ইনডিজিনাস শব্দ ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করে না। ইন্ডিজিনাস শব্দের বাংলা অর্থ আদিবাসী বোাঝায় না।’
বাদী মিজানুর রহমান আকন্দ মামলার আর্জিতে অভিযোগ করেন, সংবিধান বহির্ভূত ও সরকারী প্রজ্ঞাপন অমান্য করে শান্তিভঙ্গের প্ররোচনা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান এবং জনসাধারণের অনিষ্ঠ হতে পারে এমন ধরনের বিবৃতি প্রকাশ করেছেন ওই সাংবাদিক।
মামলার বাদী মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, “বাংলাদেশ সংবিধানের আর্টিকেল ৩৯(২)-এ সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে প্ররোচনা, উত্তেজনা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, আদালত অবমাননা ইত্যাদি সৃষ্টি না করতে নির্দেশনা থাকলেও গত ২৮ জুলাই তারিখে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় আসামি সঞ্জয় কুমার বড়ুয়া ‘থ্রি ইনডিজেনাস ভিলেজ ফেইস ল্যান্ড গ্র্যাবিং’ শীর্ষক সংবাদ প্রচার করে তা ভঙ্গ করেন।
এই সংবাদ শিরোনামে ‘ইনডিজেনাস’ তথা ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর মাঝে চরম অসন্তোষ, বিভিন্ন স্থানে মারামারি ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উপক্রম করেছে, যা বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০৪, ৫০৫ ও ৫০৫(খ) ধারায় অপরাধ।’
এর আগেও একই অভিযোগে উক্ত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গত ২১ আগষ্ট বুধবার খাগড়াছড়ির সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে বাদী হয়ে পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসএম মাসুম রানা আরেকটি মামলা গ্রহণের আবেদন করলে মামলাটি গ্রহণ করে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য চট্টগ্রাম পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল আলম। কিন্তু গত ১২ সেপ্টেম্বর পূর্নাঙ্গ প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে না পারায় আদালত আগামী ৭ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানী ধার্য করেন বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী এসএম মাসুম রানা।