বান্দরবানে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বাঁশের তৈরি থ্রুং (ঝুড়ি)

fec-image

যুগ যুগ ধরে পাহাড়ের সংস্কৃতি রক্ষায় এখনো টিকে আছে পার্বত্য বান্দরবানে আদিকালের সেই পাহাড়ের থ্রুং (ঝুড়ি) । যাকে একেক সম্প্রদায়ের লোক একেক নামে বলে থাকে। যেমন- মারমারা বলে ‘ওয়াই খারাং’, চাকমারা বলে ‘পুললেং’, বমরা বলে ‘সাই’, মরংরা বলে ‘টুম’, তংচংঙ্গ্যারা বলে ‘পুঃ ল্যাং’। প্রত্যেক জনগোষ্ঠীদের নিজস্ব ভাষায় আলাদা আলাদা নাম থাকলেও ব্যবহার কিন্তু এক।

পরিবেশবান্ধব বাঁশের তৈরি থ্রুং ব্যবহার ও তৈরি হয় কাজের ভেদে ছোট বড় আকারে। পাহাড়ে দৈন্দিন কাজে থ্রুং এর ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

জুম কাটা, জুম থেকে ফসল তোলা, বাগান ও ক্ষেত থেকে বিভিন্ন ফসল বয়ে আনা, হাট বাজারে পণ্য নিয়ে আসা আবার নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। আবার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গেলে থ্রুং এ করে নিজেরদের ব্যবহার সামগ্রী নিয়ে যাওয়া যায় সহজেই। জঙ্গল থেকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ এবং ঝিরির পানি ভর্তি বতলগুলোকে ঝুড়িতে ভরে আনাসহ নানান কাজে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। যা পাহাড়ে এখানকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের সংস্কৃতির একটি অংশও বটে। যার ব্যবহার আদিকাল থেকে পাহাড়ে পাহাড়ে বয়ে চলছে।

পাহাড়ি জনগোষ্ঠীরা বিশেষ কোন অনুষ্ঠান অথবা শশুর বাড়িতে বেড়াতে গেলে থ্রুং এ করে উপহার সামগ্রী নিয়ে যান। এর ব্যবহার এতটাই গুরুক্তপূর্ণ ও প্রয়োজন মানুষের মরাদেহ শ্মশান ঘাটে নিয়ে যাওয়ার সময় তার পরনের কাপর পর্যন্ত থ্রুং এ করে নিয়ে যাওয়া হয়।

বর্তমানে এই সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পার্বত্য জেলা বান্দরবানে কাজ করে যাচ্ছে। তাই তারা পুরাতন সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের কর্মকর্তারা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন