বার্সা রিয়াল পিএসজির জয়লাভ

ক্রীড়া ডেস্ক:

গতরাতে অনুষ্ঠিত ইউরোপিয় বিভিন্ন লিগের নিজ নিজ ম্যাচে জয়লাভ করেছে বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ ও পেরিস সেন্ট জার্মেই।

মেসি জাদুতে শুভ সূচনা বার্সার

নেইমার চলে গেছেন, সুয়ারেস ইনজুরিতে। এমএসএন ত্রয়ীর কেবল এম-মেসিই ছিলেন। চোটের কারণে তার পাশে ছিলেন না আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও। তবু লি লিগায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিততে অসুবিধা হয়নি বার্সেলোনার। ঘরের মাঠে রিয়াল বেতিসকে দুই গোল দিয়েছে তারা।

রোববার ন্যু ক্যাম্পে নিজে গোল না পেলেও খেলার মধ্যমণি ছিলেন লিওনেল মেসিই। ৩৬ মিনিটে আত্মঘাতি গোল আর ৩৯ মিনিটে সার্জিও রবার্তোর করা গোলে জয় নিশ্চিত হয় কাতালানদের।

খেলার শুরুতেই বার্সেলোনায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণ করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। প্রতিবাদ আর নিহতদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে এদিন সব খেলোয়াড়ের জার্সির পেছনে লেখা ছিলো বার্সেলোনা।

ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলের প্রাধান্য ছিল আর্নেস্তো ভালভার্দের শিষ্যদের। তবে গোল হতে পারত আরও বেশি। মেসির তিনটি শটই সাইড বারে লেগে ফিরে আসে। ৩৪ মিনিটের সময় ফ্রি কিক থেকে গোল পেতেই পারতেন এলএমটেন। তার বাঁকানো শট গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও ডান পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৩৬ মিনিটে দেউলাফেউর সঙ্গে বোঝাপড়ায় ডি বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। তার পাস থেকে পাওয়া বল দেউলাফেউ শট নিলে প্রতিপক্ষের আলিন তোসকার পায়ে লেগে দিক বদলে জালে ঢুকে যায়।

খানিক পর গোল শোধের সুযোগ পেয়েছিল বেতিস। সার্জিও লেওনের একক প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন মাসচেরানো। তিন মিনিট পরই ব্যবধান বাড়িয়ে নেন সার্জিও রবার্তো। দেউলাফেউয়ের কাছ থেকে বল পেয়ে আড়াআড়ি শটে বল জালে ঢুকান তিনি।

নেইমারের নৈপুণ্যে পিএসজির গোল উৎসব

প্যারিস সেন্ত জার্মেইতে নেইমারের অভিষেক হয়েছিল গুইনগাম্পের মাঠে। আর রবিবার প্রথম তিনি নামলেন ক্লাবের হোম ভেন্যু পার্ক ডি প্রিন্সেস স্টেডিয়ামে। ব্রাজিলিয়ান তারকার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সাক্ষী হলো ঘরের দর্শকরা। লিগ ওয়ানে তুলোসের বিপক্ষে পিএসজির গোল উৎসবের দিনে নেইমার করেছেন দুটি গোল, বানিয়ে দিয়েছেন দুটি। এছাড়া আদায় করেছেন একটি পেনাল্টি। তার নৈপুণ্যে ৬-২ গোলে তুলোসকে উড়িয়ে দিয়েছে গতবারের রানার্সআপরা।

শুরুতে পিছিয়ে পড়েছিল পিএসজি। নজরের বাইরে থাকা ম্যাক্স গ্রাডেলের ভলিতে ১৮ মিনিটে গোলমুখ খোলে তুলোস। ৩১ মিনিটের গোলে দলকে সমতায় ফেরান নেইমার। চার মিনিট পর আদ্রিয়েন র‌্যাবিয়টকে দিয়ে গোল করিয়ে পিএসজিকে এগিয়ে নেন তিনি।

বিরতির পর ছোটখাটো ধাক্কা খায় সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। ২১ মিনিট বাকি থাকতে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মার্কো ভারেত্তি মাঠ ছাড়েন। পিএসজি হয়ে যায় ১০ জনের। তাতে কোনও সমস্যা হয়নি। তুলোসের ডিবক্সে এন্ডি ডেলোর্টের ফাউলের শিকার হন নেইমার। পেনাল্টি থেকে ৭৫ মিনিটে দলের তৃতীয় গোল করেন এডিনসন কাভানি। ৭৮ মিনিটে থিয়াগো সিলভার আত্মঘাতী গোলে পিএসজির সঙ্গে তুলোসের ব্যবধান কমে দাঁড়ায় ৩-২ গোলে, ম্যাচে ফেরে উত্তেজনা।

তবে বদলি নামা হাভিয়ের পাস্তোরের ৮২ মিনিটের চমৎকার গোলে সব শঙ্কা মুছে যায়। দুই মিনিট পর কুরজাওয়াকে অ্যাক্রোবেটিক গোল বানিয়ে দেন নেইমার। আর ইনজুরি সময়ে প্রতিপক্ষের কফিনে শেষ পেরেক ঠুঁকে দেন এ ব্রাজিলিয়ান।

টানা তিন জয়ে মোনাকো ও সেন্ত এতিয়েন্নের সঙ্গে যৌথভাবে লিগ ওয়ানের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে পিএসজি।

সহজ জয়ে লিগ শুরু রিয়ালের

নিষেধাজ্ঞার কারণে রোনালদো নেই। তাতে কোন প্রভাব পড়েনি রিয়াল মাদ্রিদের খেলায়। লা লগায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে দোপার্তিভো লা করুনাকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে জিনেদিন জিদানের দল। বেল-ইস্কো-টনি ক্রুজরা মাঠজুড়ে দেখিয়েছেন গতি আর ছন্দের প্রদর্শনী।

রোববার রাতে দোপার্তিভোর মাঠে খেলা শুরুর আগে বার্সেলোনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। স্প্যানিশ সুপার কাপের দুই লেগেই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার জালে দুই গোল দিয়ে আলোচনায় আসা মার্কো আসেনসিওকে এদিন নামাননি জিদান। এদিন রিয়ালের হয়ে গোল পান গ্যারেথ বেল, কাসামিরো আর টনি ক্রস।

খেলার ২০ মিনিটের সময় গোলকিপারের ভুলে সুযোগ পায় রিয়াল। লুকা মদ্রিচের শট সোজা হাতে গেলেও তা রাখতে পারেননি তিনি। ফাঁকা পোস্ট পেয়ে বল জালে পাঠান বেল। মিনিট সাতেক পর হয়ে যায় আরেক গোল। এবার নিজেদের মধ্যে দেওয়া নেওয়া করে ইস্কোর আর মার্সেলো বল জোগান দেন কাসামিরোকে। বল জালে পাঠাতে কোন ভুল হয়নি তার।

বিরতির পর ব্যবধান ৩-০ তে নিয়ে যান টনি ক্রুজ । ৬২ মিনিটের সময় বেলের কাছ থেকে বল পেয়ে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন জার্মান মিডফিল্ডার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন