বৃষ্টিতে দুর্ভোগ বেড়েছে রোহিঙ্গাদের

fec-image

গত ৪ দিনের টানা বৃষ্টিতে দুর্ভোগ বেড়েছে উখিয়া-টেকনাফের শরণার্থী শিবিরে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের। শনিবার থেকে বুধবার (৩ জুলাই) পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিতে শিবিরের অনেক ঝুপড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। ঝড়ো বাতাসে উড়ে গেছে অনেক ঘরের ছাউনি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পাহাড়ের পাদদেশে আশ্রয় নেওয়া হাজারো রোহিঙ্গা নর-নারী ভূমিধসের আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ফলে ২০১৭ সালে ২৫ আগস্টের পরে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে পুরানো রোহিঙ্গাসহ উখিয়া ও টেকনাফে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

বুধবার সকালে উখিয়ার কুতুপালং, লম্বাশিয়া, মধুরছড়া, ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখা যায়, বন বিভাগের পাহাড় পরিষ্কার করে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে তৈরি করা অনেক ঝুপড়ি ঘর বৃষ্টির পানিতে ঝুকির মুঁখে পড়েছে। এছাড়া টানা বৃষ্টিতে কাদা ও নর্দমার পানিতে চলাচলের পথে দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

এ সময় কয়েকজন রোহিঙ্গার সাথে কথা হলে তারা জানান, শনিবার থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে উখিয়ার বিভিন্ন শিবিরের শতাধিক পরিবারের ঘরের ছাউনি উড়ে গেছে। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় অন্যত্র আশ্রয় খুজঁছেন অনেকে।

লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাদদেশে আশ্রয় নেওয়া নুরুচ্ছফা বেগম (৪৫) জানান, অতি বৃষ্টির কারনে ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে কয়েকদিন ধরে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় দুশ্চিতায় রয়েছে বলে জানায় সে। ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাহামুদুর রহমান (৪০) নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, বৃষ্টি হলে না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয়। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে অতি কষ্ঠে থাকতে হয়।

কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ নুর জানান, ক্যাম্পে তৈরীকৃত ঘরগুলো খুবই দুর্বল। সামান্য বাতাসে নড়াচড়া করতে থাকে। তাই ঝড়ো হাওয়া সৃষ্টি হলে এসব ঘর গুলো নুয়ে পড়ে। যার ফলে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়ে থাকে বলে সে জানিয়েছেন।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, যে কোন দুর্যোগে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের পাশাপাশি এনজিও সংস্থার মধ্যে প্রস্তুতি রয়েছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গা বসতি নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার, রাখাইন, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন