বেতন চাওয়ার অপরাধে গ্রিসে ৩০ বাংলাদেশি শ্রমিককে গুলি

গ্রিসে বেতন চাওয়ার অপরাধে অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত ৩০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। এদের অধিকাংশ বাংলাদেশি শ্রমিক। পুলিশ এ ঘটনা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ৬ মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে বিতর্ক শুর” হওয়ার একপর্যায়ে তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। প্রেসটিভি

গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে ২৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে মানোলাদা গ্রামে একটি স্ট্রবেরি খামারে কর্মরত অভিবাসী শ্রমিকরা মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে তা পরিশোধের দাবি জানায়। এসময় ওই খামারের অফিসে অন্তত ২০০ শ্রমিক জড়ো হয়। বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্যে তারা কর্তৃপক্ষের লোকজনকে চাপ দিতে থাকে এবং এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অস্ত্রধারী ৩ ফোরম্যানের একজন শ্রমিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ আহত অব¯’ায় শ্রমিকদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে যাদের মধ্যে ৮ জনের অব¯’া আশঙ্কাজনক। তবে এ ঘটনার সময় খামারের মালিক সেখানে ছিলেন না। তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর জিজ্ঞাসাবাদ করছে। একই সঙ্গে পুলিশ অস্ত্রধারী ওই ৩ ফোরম্যানকে গ্রেপ্তারের চেষ্ট চালিয়ে যা”েছ যাদের প্রত্যেকেই গ্রিসের নাগরিক। গ্রিসে প্রায়শ বকেয়া বেতনের দাবিতে অভিবাসী শ্রমিকদের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। এছাড়া বর্ণবাদী সহিংসতার বির”দ্ধে কার্যকর ব্যব¯’া ও মানবাধিকার রক্ষার জন্যে ইউরোপ কমিশনার গত ১৬ মার্চ গ্রিস সরকারের কাছে আহবান জানান। গ্রিসে বিশেষ করে মানোলাদা গ্রামে অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতবছর মিসরের কয়েকজন শ্রমিককে পেটানোর দায়ে গ্রিসের দুজন নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় মিসরের এক শ্রমিককে একটি গাড়ির জানালার মধ্যে মাথা চেপে রাখা অবস্থায় এক কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০০৮ সালে কম পারিশ্রমিক দেওয়ার কারণে গ্রিসে অভিবাসী শ্রমিকরা চার দিন ধর্মঘট করে। কাজের অনিশ্চয়তা ছাড়াও এসব অভিবাসী শ্রমিকরা গ্রিসে দিনে মাত্র ৫ ইউরো পেয়ে থাকে।

গ্রিসের বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মোহাম্মদ গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, ম্যানোলাদা এলাকায় অনেক খামার রয়েছে। সেখানে পাঁচ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে ওই স্ট্রবেরি খামারে এ ঘটনা ঘটে। এতে গুলিতে ৩২ বাংলাদেশি আহত হন। তাঁদের দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর বেশিরভাগ শ্রমিককে ছেড়ে দেওয়া হলেও সাতজন এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তবে তারা আশঙ্কামুক্ত।

গোলাম মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘দূতাবাসের কাউন্সিলর জামাল হুসেইন ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। গ্রিস সরকার এ ঘটনায় একটি মামলা করেছে। এর মধ্যে খামার মালিক ও তত্ত্বাবধায়ককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

One Reply to “বেতন চাওয়ার অপরাধে গ্রিসে ৩০ বাংলাদেশি শ্রমিককে গুলি”

  1. এর জন্য দায়ী বাংলাদেশের দূতাবাস ও সরকার ।এই ঘটনার সাথে জরিত ব্যাক্তিদের সঠিক বিচার চাই ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন