ভারী যানবাহন চলাচলে চরম ঝুঁকিতে চকরিয়া-মাতামুহুরী সেতু

fec-image

চকরিয়া প্রতিনিধি:

১০ টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল করার কারণে মহাসড়কের চকরিয়ার চিরিঙ্গা-মাতামুহুরী সেতুর বেশ কয়েকটি স্থানে বড় ধরণের ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সেতুটি।

সেখানে লোহার বড় পাইপের ঠেস দিয়ে ভাঙ্গণ ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের ক্রস বর্ডার ইমপ্রুভমেন্ট বিভাগ।

এর আগেও সেতুটির মাঝখানে দেবে গিয়ে বড় ধরণের ফাটল সৃষ্টি হয়। তখন সেতুর নিচে বালির বস্তার ঠেস দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। সেসময় সেতুর দু’দিকে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড দেওয়া হয়, ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, তাই ১০ টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ’।

অভিযোগ উঠেছে, ১০ মাস আগে গত বছর জুন মাসে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সংস্কার খাতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে আড়াই কোটি টাকার বিল পরিশোধ করেছেন।

ওই সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা পয়েন্টের মাতামুহুরী সেতুর নীচে বালুর বস্তার ঠেস দিয়ে জোড়াতালির মাধ্যমে সেতুটির সংস্কার কাজও সম্পন্ন করেছিলেন। তারপর কয়েকমাস সেতু দিয়ে সব ধরণের যানবাহন চলাচল আগের মতো স্বাভাবিক হলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কয়েক দফা বৃষ্টিতে ফের সেতুর সংস্কার করা অংশে (মাঝ পয়েন্টে) উপরে প্রলেপ লাগানো বিটুমিন গুলো উঠে পড়ে।

এতে আবারও গর্তের সৃষ্টি হয় সেতুর বিভিন্ন অংশে। সর্বশেষ গত ২১ এপ্রিল সেতুর সংস্কার করা অংশের একটি বিশাল এলাকা নতুনভাবে ধ্বসে পড়ে।

এতে সেতুর এক পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচলের কারণে তৈরি হয় তীব্র যানজট। পাশাপাশি চরম ঝুঁকিতে পড়ে সব ধরণের যানবাহন চলাচল।

অভিযোগ রয়েছে, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলমান রেললাইন প্রকল্পের কাজে ব্যবহারের জন্য প্রায় ৩০ টন ওজনের ১০ চাকার গাড়িতে করে চকরিয়া থেকে প্রতিদিন নেয়া হচ্ছে শত শত ট্রাক বালু।

বালু পরিবহনে কারণে বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে মাতামুহুরী সেতুটি।

স্থানীয় লোকজনের দাবি, বালুভর্তি এসব গাড়ি সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করার কারণে সেতুতে এমন সমস্যা হয়েছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরণের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে সেতুটি। ঘটনার পর ইতোমধ্যে সেতুর মাঝখানে দেবে যাওয়া অংশে সতর্কতামূলক মিনি সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয়েছে। তারপরও সেতুটি বর্তমানে বড় ধরণের বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের চকরিয়া উপ-বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আবু আহসান মো. আজিজুল মোস্তফা বলেন, এই সেতুটি বর্তমানে আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এটি এখন ক্রস বর্ডার ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় আছে। তাই সেতুটির ভালো-মন্দ সবকিছু দেখবেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

তারপরও সেতুটির বেশ কয়েকটি স্থানে বড় ধরণের ফাটলসহ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, ছয় লেনের নতুন মাতামুহুরী সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত পুরনো সেতুর উপর দিয়েই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। এ জন্য কোনো অবস্থাতেই ১০ টনের বেশি ভারী যানবাহন চলাচল করতে না দিতে সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানাবো।

চকরিয়া উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি কোনো অবস্থাতেই বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে দেওয়া উচিত হবে না। ইতোমধ্যে সেতুটির বেশ কয়েকটি স্থানে বড় ধরণের ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে আমরা আতঙ্কিত।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন