‘মহাজোট সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন বিরোধী’
আলমগীর মানিক,রাঙামাটি :
শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কার্যকর উদ্যোগের অভাব রয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নে দীর্ঘ কালক্ষেপণের ফলে পাহাড়ের পরিস্থিতি হয়ে উঠছে ক্রমেই অশান্ত থেকে জটিলতর। এটি কারোরই কাম্য হতে পারে না। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ে শান্তিচুক্তি-পূর্ব অবস্থার মতোই সবক্ষেত্রে সেনা কর্তৃত্ব এবং ঔপনিবেশিক কায়দায় সাম্প্রদায়িক শোষণ-নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতৃবৃন্দ। সোমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ২যুগ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এই অভিযোগ করেন। সমাবেশে পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয় গুলো বাস্তবায়ন করা না হলে আগামীতে আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারীও দেওয়া হয়। সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি সহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবী জানানো হয়েছে। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি ত্রিজিনাদ চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জনসংহতি সমিতির শীর্ষ নেতা উষাতন তালুকদার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ডিন ড. হোসাইন কবির, সমকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক অধ্যাপক আবু সাইয়েদ খান, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালযের রাস্ট্রবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক শান্তনূ মজুমদারসহ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রী, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। চুক্তির ১৫ বছর অতিক্রান্ত হলেও বর্তমান সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে না জানিয়ে বক্তারা বলেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার মুখে চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক বললেও দলগতভাবে তারা পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে বিরোধী। তাই এ সরকারের বিগত চার বছর সময়েও চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি এবং আদৌ হবে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন বক্তারা।
সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্রপরিষদের নেতৃবৃন্দ সরকারের দৃষ্টি আর্কষণ করে বলেছেন, অবিলম্বে পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করে পাহাড়ে স্থিতিশীল ও উন্নয়নের পরিবেশ নিশ্চিত করুন। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে, জুম্ম জনগণকে দ্বিধাবিভক্ত করতে, জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ে বারংবার বাধা সৃষ্টিকারি সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ প্রশাসনের সহায়তার সমালোচনাও করে পাহাড়ি নেতৃবৃন্দ পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে পাহাড়ি ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। পরে সমাবেশ শেষে জিমনেসিয়াম মাঠ থেকে একটি র্যালী শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।