মানিকছড়িতে রাতের আধাঁরে সরকারি বাঁধ কাটলো দুর্বৃত্তরা: ক্ষতি ১৫ লাখ টাকা

fec-image

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার পর্যটন খ্যাত ‘ডিসি পার্কে’ রাতের আধাঁরে লেকের বাঁধ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা! এতে ৩ একর বিশিষ্ট লেকে থাকা নানা প্রজাতির প্রায় ১২ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ ও ভেসে যাওয়া মাছে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়।বুধবার (৫ অক্টোবর) গভীর রাতে কোন এক সময় দুর্বৃত্তরা এই ঘটনা ঘটায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ২১৪ নম্বর ডলু মৌজার অন্দরে ১৪০.২০ একর টিলাভূমি জুড়ে রয়েছে বনজ,ফলজ ও ঔষধি গাছ ও তিনটি বড় লেক। দীর্ঘদিন সরকারি এই সম্পদ বেদখলে থাকার পর সম্প্রতিকালে প্রশাসন বেদখল সম্পদ উদ্ধার করে তাতে ‘ডিসি পার্ক’ নামকরণে পর্যটন এলাকা ঘোষণা করে উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা শুরু করেছেন। বন সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি তিনটি লেকে নানা প্রজাতির মাছ অবমুক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বাঁধটি দৈর্ঘ্য ১২০ ফুট, প্রস্ত ৪০ ফুট, উচ্চতা ৩০/৩৫ ফুট। এতে নানা প্রজাতির আনুমানিক ১২ লাখ টাকার মাছ চাষ করা হয়েছে। এই দীর্ঘ বাঁধটি কেটে দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ডলু, ডাইনছড়ি এলাকায় কৃষকদের আমান ধান খেত, সবজি খেত পানিতে ডুবে যায় এবং লোকালয়ে মাছ ধরার জন্য মানুষজন ভীড় জমায়।

বাটনাতলী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ইউপি সদস্য মো.আবুল হাসেম জানান, ডিসি পার্কে লেকের বাঁধ দুর্বৃত্তরা কেটে ফেলায় নানা প্রজাতির মাছ হালদা নদীর উপশাখা ডলু খালে ভেসে যায়। এলাকার লোকজন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খাল ও জমির গর্তে কুনিজাল ফেলে এবং পানি সেচে মাছ ধরার উৎসবে নামে। এতে ৫-৭ শত কেজি রুই, কাতল, কার্প, তেলাপিয়া, সরপুঁটি, শিং মাছ ধরতে দেখা গেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠে ডলু খালে পানির স্রোত দেখে প্রথমে ভাবছি উজানে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। পরে লোকমুখে জানতে পারি ডিসি পার্কের লেক ভেঙ্গে গেছে। লেকের বাঁধ ভাঙ্গার বিষয়টি বিশ্বাস না হওয়ায় সরজমিন গিয়ে দেখি আসলে কে বা কারা বাঁধটি কেটে দিয়ে সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। এতে বাঁধ ও চাষকৃত মাছসহ কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) রক্তিম চৌধুরী বলেন, উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সম্পদে ঘেরা ১৪০.২০ একর বেদখল টিলাভূমি গত ২০১৯ সালে দখলমুক্ত করে তাতে ডিসি পার্ক নামকরণ করে পর্যটন বান্ধব করতে লেক, কটেজ, বিশ্রামাগার নির্মাণসহ সংস্কার কাজ চলছে । গত রাতে দুর্বৃত্তরা লেকের বাঁধ কেটে দেওয়ায় নানা প্রজাতির মাছ ও সরকারি সম্পত্তির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে এ বিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন