রাশিয়ায় গিয়ে জান্তাপ্রধানের দাবি

মিয়ানমারকে অস্থিতিশীল করতে ‘সন্ত্রাসীদের’ অস্ত্র ও অর্থ দিচ্ছে পশ্চিমারা

fec-image

মিয়ানমারকে অস্থিতিশীল করতে ‘সন্ত্রাসীদের’ অস্ত্র ও অর্থ দিচ্ছে পশ্চিমারা-রাশিয়ায় গিয়ে এমনটিই দাবি করছেন দেশটির জান্তাপ্রধান। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য দেশটির সামরিক বাহিনীকে দায়ী করা হয়। এ ছাড়া স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত ও বিক্ষোভ দমনেও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তবে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং উল্টো কথা বলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, পশ্চিমা বিশ্ব মিয়ানমারের ‘সন্ত্রাসীদের’ অর্থ ও অস্ত্র দিচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে।

রাশিয়ার সফরে গিয়ে দেশটির বার্তা সংস্থা আরআইএকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিন অং হ্লাইং এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, দেশটির সংকট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিকল্পনা অনুসারে আগামী বছর নির্বাচন আয়োজনে যা যা করা দরকার, সামরিক সরকার তা-ই করবে।

আরআইএর সঙ্গে আলাপকালে মিয়ানমারের এই জান্তা সরকারের প্রধান আরও বলেন, আগামী বছরের আগস্টে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে যে পরিকল্পনা রয়েছে, তা পিছিয়ে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে কথা বলার সময় এখনো আসেনি। কারণ, এই নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যথেষ্ট সময় জান্তা সরকারের হাতে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগামী বছর নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। এই প্রতিশ্রুতি পূরণে আমরা সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

বিদেশি শক্তির কোনো প্রভাব এই নির্বাচনে থাকবে না বলেও উল্লেখ করেছেন জান্তাপ্রধান। তিনি বলেন, বহির্বিশ্বের কোনো চাপ ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নয়তো এই নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে না।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চি সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভ দমনে সামরিক বাহিনী যেভাবে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে, তেমনি দেশটির রাজনীতিকদের গণহারে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের বিচারও হচ্ছে সামরিক সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন আদালতে। তবে জান্তা সরকারকে রুখতে সশস্ত্র লড়াই শুরু করেছেন গণতন্ত্রকামীরা, যাঁদের সমর্থন দিচ্ছে পশ্চিমারা। আর জান্তা সরকার সমর্থন পাচ্ছে রাশিয়া ও চীনের।

রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভ্লাদিভস্তকে অনুষ্ঠেয় ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে যোগ দিতে দেশটি সফরে গেছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান। চীন, ভারত, জাপানসহ বেশ কিছু দেশের প্রতিনিধিরা ওই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। মূল সম্মেলন চলাকালে আজ বুধবার আলাদাভাবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন হ্লাই।

ক্রেমলিনের বিবৃতি অনুযায়ী বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘মিয়ানমার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আমাদের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত অংশীদার। ইতিবাচকভাবে আমাদের সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।’

মিয়ানমারের জান্তা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতা বন্ধুত্বপূর্ণ ও খোলামেলা আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া দুই দেশের বর্তমান সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁরা।

বৈঠকের পর মিন অং হ্লাইংয়ের বরাত দিয়ে আরআইএর খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনতে শুরু করেছে মিয়ানমার। এই অর্থ পরিশোধে রুশ মুদ্রা রুবল ব্যবহার করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন