মিয়ানমারে অবধে পাচার হচ্ছে কেরোসিন ও ভোজ্য তৈল

Teknaf 1

মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ:
সরকার অনুমোদিত পাম্প ছাড়া অন্য কোথাও পেট্রোল ও অকটেনের মতো দাহ্য জ্বালানি বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারির অভাবে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে কমপক্ষে ২০টি দোকানে পেট্রোলও অকটেন বিক্রি হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ ও হ্নীলার এলাকার বেশকিছু পাম্পের অসাধু কর্মচারীর সঙ্গে আঁতাত করে দোকানিরা সহজেই পেয়ে যান এসব জ্বালানি। অনুমোদিত পাম্পে পেট্রোল লিটারপ্রতি ৯৬ টাকা দরে বিক্রি হলেও খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং,টেকনাফ বাস ষ্টেশন, বাস টার্মিণাল, হ্নীলা, মৌলভীবাজার, হোয়াইক্য বিভিন্ন স্থানে ও বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে পেট্রোল ও অকটেন। কোনো কোনো দোকানের সামনে ‘এখানে পেট্রোল পাওয়া যায়’ লিখে রাখা হয়েছে। নয়াপাড়া এলাকার একজন দোকানদার জানান, টেকনাফের একটি পাম্প থেকে তিনি বড় ড্রামে ভরে পেট্রোল আনেন। পাম্পের নাম জানতে চাইলে তিনি নাম বলতে অস্বীকৃতি জানান। রাজনীতিসংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হরতালে নাশকতা সৃষ্টিকারী ও মিয়ানমারে পাচারের জন্য ড্রামে করে এসব দোকান থেকে পেট্রোল সংগ্রহ করে।

নাফ ভিউ ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আগে আমরা বিক্রি করেছি। কিন্তু সম্প্রতি মালিক আমাদের নিষেধ করে দিয়েছেন। তাই এখন আর বিক্রি করি না।’ টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোঃ ফরহাদ বলেন, এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করা জরুরী বলে করেন। অপরদিকে মিয়ানমারে জ্বালানী তৈল ও ভোজ্য পন্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে টেকনাফের পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে টেকনাফ বাসষ্টেশন, লামার বাজার ও উপরের বাজার থেকে প্রতিদিন মিয়ানমারে পাচার করছে কয়েক লক্ষ লক্ষ টাকার তেল।

টেকনাফ উপজেলার শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং, নাজিরপাড়া,চৌধুরী পাড়া,জালিয়াপাড়া, নাইট্যংপাড়া,বরইতলী,জাদিমুরা জেলেঘাট, হ্নীলা,ওয়াব্রাং, মৌলভীবাজার, খারাংখালী, নয়াবাজার, উনছিপ্রাংও হোয়াইক্যং সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত মিয়ামারে পাচার হচ্ছে কেরোসিনও ভোজ্য তৈল যার পরির্বতে মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসছে বিভিন্ন প্রকার মাদক।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শাহপরীরদ্বীপের লম্বা সেলিম, জালিয়া পাড়ার নুরু, সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়ার হাসু মিয়া, জিয়াউর রহমান, ইসলাম, রফিক, কুলাল পাড়ার ফয়েজুর রহমান ফজু জনৈক মোঃ রমজান, নাইট্যং পাড়ার কাসেম, ফরিদ আলম, ছৈয়দ আলম, জাদিমুরার ইউনুছ, শফি, দয়ান, হ্নীলার মজিদিয়া ষ্টোর, মৌলভী বাজারের শমসু, খারাংখালী আবছার ষ্টোর ও কামাল ষ্টোর, এসব জ্বালানী তৈল মিয়ানমার পাচার করে। প্রতিবারে উপজেলা চোরাচালান ট্রাস্কফোস কমিটির সভায় বিশদভাবে আলোচনা হলেও এর কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা। যার ফলে ব্যবসায়ীরা অবাধে বিক্রি মিয়ানমারে পাচার করতে উৎসাহী হচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের অভিযানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন