মিয়ানমারে সংঘাত: জীবন বাঁচাতে আরো ৬৩ জন আশ্রয় নিল বাংলাদেশে

fec-image

মিয়ানমারে অভ্যন্তরণী চলমান সংঘর্ষে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন আরও ৬৩ জন। বুধবার দুপুরে কক্সবাজার টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নতুন করে আরও ৬৩ জন এসেছেন।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপিসহ অন্যান্য বাহিনীর ৩২৭ সদস্যকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে বিজিবি। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বিজিবি বলছে, যারা অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার রিজিয়নের আওতাধীন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিদর্শন করেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদা তৎপর রয়েছে।

এদিন সকালে মহাপরিচালক বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) দায়িত্বপূর্ণ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত এবং তৎসংলগ্ন বিওপি পরিদর্শন করেন।

এসময় তিনি সীমান্তে দায়িত্বরত সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের খোঁজ খবর নেন এবং তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরিদর্শনকালে তিনি দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদা তৎপর থাকার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য দায়িত্বরত সব বিজিবি সদস্যের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

বিজিবি মহাপরিচালক মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘর্ষের জেরে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), মিয়ানমার সেনাবাহিনী, ইমিগ্রেশন সদস্য, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সব সদস্য খোঁজ খবর নেন এবং আহত অবস্থায় আসা ও হাসপাতালে চিকিৎসারত বিজিপি সদস্যদের দেখতে যান।

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ধৈর্য ধারণ করে, মানবিক থেকে এবং আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, অবৈধভাবে আর একজনকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এ সময় বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার, রামু সেক্টর কমান্ডার ও কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়কসহ বিজিবির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), মিয়ানমার সেনাবাহিনী, পুলিশ, ইমিগ্রেশন সদস্য ও অন্যান্য সংস্থার ৩২৭ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদেরকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং আহতদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ, মিয়ানমার, সীমান্ত উত্তেজনা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন