মিয়ানমার ইতিহাসের অন্ধকারে ধাবিত হচ্ছে: জাতিসংঘের বিশেষ দূত

fec-image

মিয়ানমারে নিয়োজিত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি বলেছেন, মিয়ানমার ইতিহাসের অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। রেডিও ফ্রি এশিয়াকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারের ভবিষ্যত নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

কয়েক প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে না মিয়ানমার। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সাত লাখেরও বেশি মানুষ। জাতিগত নিধনের ভয়াবহ বাস্তবতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশটি বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও জাতিসংঘের হিসাবে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ এখনও সেখানে থেকে গেছে। তাদের ওপর এখনও দমন-পীড়ন চলছে। পাশাপাশি অন্যান্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও সে দেশের আধিপত্যবাদী বামার জাতিগোষ্ঠীর প্রাধান্যশীল সেনা নেতৃত্বের দমনপীড়ন চলমান।

রেডিও ফ্রি এশিয়ার পক্ষ থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি’র কাছে জানতে চাওয়া হয়, মিয়ানমার যদি মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে কী প্রভাব পড়তে পারে। জবাবে লি বলেন, ‘জাতিসংঘের কোন সংস্থা কিংবা অংশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রাখতে হবে, তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে মিয়ানমার খুব চালাকি করতে সক্ষম হয়ে উঠেছে। এবং এখন পর্যন্ত খুব ভালোভাবেই তারা তা করতে পেরেছে।’

সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারের বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে লি বলেন, সেখানে যা ঘটে গেছে তাতে এতে মিয়ানমারের নেতৃত্বের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত। মিয়ানমারের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের সীমা সঙ্কুচিত করা, ভূমি আর জীবন যাপনে নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকারের স্বীকৃতি না দেওয়াসহ চলমান জাতিগত সংঘাতের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখনও অনেক মানুষ স্থানচ্যুত হচ্ছে।

লি বলেন, আমি সত্যিকার অর্থে মনে করি মিয়ানমার এখন অন্ধকার পথে যাচ্ছে। ইতিহাসের অন্ধকার পথে থাকা সেই সব বছরগুলোতে ফিরে যাচ্ছে এটি। এ নিয়ে সত্যিকার অর্থে আমি কষ্ট বোধ করছি।’ লি বলেন, তিনি মিয়ানমার ও এর জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে সেখানকার নেতৃত্বের ভূমিকায় তিনি উদ্বিগ্ন ও হতাশ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন