রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচরে প্রতিপক্ষের গুলিতে দুই ইউপিডিএফ সদস্য নিহত
স্টাফ রিপোর্টার:
রাঙামাটির নান্যাচর উপজেলার বেতছড়ি এলাকায় ১৮ মাইল নামক স্থানে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউপিডিএফ সদস্য সত্য চাকমা ওরফে ব্রত (৩০) সহ দুই জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত অপর ব্যক্তির নাম বিষু কুমার চাকমা (৪২)। আজ ১২ জুন বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। জেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে বলে ইউপিডিএফের তরফ থেকে দাবী করা হয়েছে।
নিহত সত্য চাকমা বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের মাইসছড়ি গ্রামের বাঁশী চাকমার ছেলে ও বিষু কুমার চাকমা খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বক্যাছড়া গ্রামের রবি কুমার চাকমার ছেলে। এর মধ্যে বিষু কুমার চাকমা আগে ইউপিডিএফের সাথে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে তিনি ১৮ মাইলে মুদি দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। লক্ষ্মীছড়িতে সেনা-সন্তু মদদপুষ্ট বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীদের অত্যাচারের কারণে তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টার সময় সত্য চাকমা ১৮ মাইল এলাকায় সাংগঠনিক কাজে বের হন। এ সময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা প্রতিপক্ষ গ্রুপের ১০/১২ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে এসে হানা দিলে সত্য চাকমা পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলে এবং গুলি করে হত্যা করে। এরপর সন্ত্রাসীরা নিজ দোকান থেকে বিষু কুমার চাকমাকেও ধরে নিয়ে যায়। পরে অর্ধেক রাস্তায় নিয়ে গিয়ে তাকেও গুলি করে হত্যা করে ফেলে যায়। তাদের হত্যার পর সন্ত্রাসীরা রামহরি পাড়ার দিকে পালিয়ে যায়।
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা এক বিবৃতিতে এ নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ হত্যাকান্ডের ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে দিবালোকে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়ে নারকীয় উল্লাসে মেতে উঠেছে। সন্তু লারমা ও উষাতন তালুকদারের নির্দেশেই সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে খুনের রাজত্ব কায়েম করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বিবৃতিতে তিনি সত্য চাকমা ও বিষু কুমার চাকমাকে হত্যার সাথে জড়িত সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন জনসংহতি সমিতি জেএসএসের মুখপাত্র সজীব চাকমা এই ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান এঘটনায় সত্যতা স্বীকার করে জানায়, নিহতের ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছে। এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।