রাজস্থলীতে উপজেলা প্রশাসন পরিদর্শনে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাজস্থলী:
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন রাজস্থলী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মোঃ আব্দুর সবুর মন্ডল পরিদর্শন করে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি প্রথমে উপজেলা বিআরডিবি’র অর্ন্তভুক্ত বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতিমুলক একটি বাড়ি একটি খামার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরে পরিচালক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, কর্মকর্তারা নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে গড়িমসি করেন। বিভিন্ন সমন্বয় সভায় এ ব্যাপারে উপস্থাপন করা হলেও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়াতে প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, প্রশাসন কারো বন্ধু নয়। প্রশাসনকে সবার সাথে সৌহার্দ্যপুর্ণ ভালবাসা দিয়ে জনগনের সেবা দিতে হবে। তিনি মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাজস্থলীতে প্রতিমাসে উপস্থিত থাকেন না বলে ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমা জানান।

এদিকে মহিলা বিষয়ক সহকারী মিনতি জানান, ভিজিডি দুস্থ মহিলাদের প্রতিমাস অন্তর চাল বিতরনে কোন অনিয়ম বা দুর্ণীতি হচ্ছে না। পরিচালক ভিজিডি প্রাপ্ত মহিলাদের সাথে আলাপ করে জানতে পারেন, তারা প্রতি মাস অন্তর ৩০ কেজি চাল সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ নিকট থেকে পান। তিনি বলেন, নীতিমালার বাইরে দুস্থ মহিলাদের ভিজিডি দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। যারা ভিজিডি পাওয়ার যোগ্য তাদেরকে ভিজিডি চাউল দিতেই হবে।

অপরদিকে রাজস্থলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজার উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনিও মাসে একদিনও উপস্থিত থাকেন না বলে জানা যায়। মৎস্য কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকায়, পরিচালক বলেন, সরকারী বেতন মাসের পর মাস উত্তোলন করে কিভাবে কর্মস্থলে ফাকি দেয়, তা জেলা মৎস কর্মকর্তার নিকট জানতে চাওয়া হবে। আরো কিছু কর্মকর্তার অনুপস্থিতির কথা জানতে পারেন পরিচালক। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জেলা প্রশাসক বরাবরে চিঠি প্রেরনের নির্দেশ দেন।

রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করতে গিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। একজনও মেডিকেল অফিসারের উপস্থিতি না পেয়েও এবং রোগী ভর্তির বিষয়ে জানতে চেয়ে তিনি আরো অবাক হয়ে উঠেন। কেন গত ১৮ দিন যাবৎ হাসপাতালে রোগী ভর্তি করা হয়নি এবং রোগীদের বরাদ্ধকৃত খাবারের তালিকা কেন রেজিস্টারভুক্ত করা হল না- সে বিষয়ে জানার কোন লোক পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালে উপস্থিত উপসহকারী ম্যাডিকেল অফিসার রনি বড়ুয়া, নিওয়াং মারমা ও সাগ্য মারমাকে দেখতে পান পরিচালক। আপনারা কোন রকম জোড়া তালি দিয়ে হাসপাতালটি চালিয়ে যান। দেখা যাক আমি কি করতে পারি। ৪ কোটি ব্যয়ে নির্মিত এ হাসপাতালের অরাজকতা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেখে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক নাকে রুমাল দিয়ে প্রত্যেক ওয়ার্ড ও আউটডোর-ইনডোর পরিদর্শন করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন