হারবাং বাজারের বেহালদশা

রাতারাতি বাজারের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ

fec-image

কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলার এক সময়ের আলোচিত হারবাং বাজারের অবস্থা খুবই নাজুক। এ বাজারটি উপজেলা পরিষদ প্রতি বছর নিলামের মাধ্যমে মোটা আংকের রাজস্ব আয় করলেও বাজারটি সংস্কারে কোন ধরণের প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না। যার কারণে এ বাজারটি হতশ্রী হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রাচীনতম এ বাজারের বর্তমান অবস্থা বেহালদশায় পরিণত হলেও কার্যত ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বার্থ দেখার কেউ নেই। বাজারের শেডগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে রয়েছে। নেই কোন সৌচাগার, বিশুদ্ধ পানির নলকূপ ও পানি নিস্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এরই সাথে পাল্লাদিয়ে ভূমিদস্যুরা বাজারের খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গা জবর-দখল করে রাতারাতি পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে। একই সাথে বাজারে গজিয়ে উঠা বড় বড় গাছগুলো কেটে নিয়েছে। যে সব ব্যক্তি এহেন কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে তারা সকলেই ওই বাজারের মাছ ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত বাজারটি দেখভাল করার কথা হারবাং ইউনিয়ন ভূমি অফিস। অথচ এসব দেখেও তারা দেখছে না। এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

হারবাং বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী আজিজ উদ্দিন জানান, তার বাবার মৃত্যুর পর থেকে প্রায় তিন যুগ ধরে ব্যবসা করে আসছেন। তার মতে বাজারটির কালের সাক্ষী। অথচ বিভিন্ন কারণে বাজারটি আলোচিত হলেও কোন ধরণের বাজার শেড না থাকায় বর্ষায় কাক ভেজা হয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেচা-বিক্রি করতে হয়। পুরো বাজারে অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীর জন্য সৌচাগার ও নলকূপ না থাকায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলে জানান তারা।

বাজারের আরেক প্রবীণ ব্যবসায়ী দুলাল দত্ত বলেন, দীর্ঘ ৩৩ বছরে ধরে এ বাজারে ব্যবসা করলেও বাজারের কোন ধরণের উন্নয়ন দেখি নাই। শতবর্ষী দোকানগুলো পড়ে থাকলেও সরকারি বাজার শেডগুলো আসমানির বাড়ির দশা। তিনি আরো দাবি করেন, এ বাজারটি ছিল এক সময় গ্রামীণ জনপদের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র। তবে বেশির ভাগ দোকানপাট এখন রাস্তার আশপাশে গড়ে উঠায় বাজার ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুবই খারাপ। রাস্তার ধারের দোকানপাটগুলো সরিয়ে বাজারে স্থাপিত হলে পুরানো সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন মিরাজ বলেন, বাজারটি নতুন করে সংস্কারের জন্য পরিষদ থেকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে বরাদ্দের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। তবে বাজারের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ ব্যাপারে তিনি অবগত নয় বলে জানান।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, বাজারের অবস্থান পরিদর্শনপূর্বক উপজেলা প্রশাসন থেকে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আর কেউ বাজারের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বাজার, স্থাপনা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন